দিল্লিতে নীতি আয়োগের বৈঠকে মাইক বন্ধ করে দেওয়ায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অসৌজন্যের অভিযোগকে তীব্র কটাক্ষ করলেন বিধানসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক শংকর ঘোষ। শনিবার মমতার মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তিনি বলেন, সরকারি অনুষ্ঠানে যা খুশি বলা যায় না। এটা মুখ্যমন্ত্রী এখনও বুঝে উঠতে পারেননি।
এদিন মমতাকে আক্রমণ করে শংকরবাবু বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর যে আচরণ আমরা বিধানসভায় দেখি, যেরকম অস্থিরমতি আচরণ করেন ও যা খুশি তাই বলতে থাকেন। সরকারি অনুষ্ঠানে তো যা খুশি বলা যায় না। অবান্তর কথা বললে তো মাইক বন্ধ করে দেবেই। উনি তো নবান্ন থেকে রাজনৈতিক বক্তব্য রাখেন। এটা নীতি আয়োগের সভা। এটা তো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, যে যা খুশি তাই বলবেন। সরকারি অনুষ্ঠানে কী বলা যায় এটা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ন্যূনতম ধারণা থাকলে প্রশাসনিক সভার নামে যা করেন সেখানে বিরোধী দলের বিধায়কদের ডাকা হয় না কেন? বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা ও আমাকে বারবার সাসপেন্ড করা হয় কেন?’
মমতার অসৌজন্যের অভিযোগ উড়িয়ে শংকরবাবু বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী নিজে কোন সৌজন্যের ধার ধারেন যে সৌজন্যের প্রত্যাশা করছেন? উনি প্রশাসনিক সভায় বিরোধীদের ডাকেন না। সমস্ত হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতি থেকে বিরোধীরা বাদ। টি বোর্ডের পরামর্শদাতা বোর্ড তৈরি করেছেন সেখানে বিরোধী দলের বিধায়ক – সাংসদরা বাদ।’
এদিন নীতি আয়োগের বৈঠক থেকে ওয়াক আউট করেন মমতা। এর পর সাংবাদিকদের সামনে অভিযোগ করেন তাঁর মাইক্রোফোন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। মমতা বলেন, ‘আমি দেশের স্বার্থে, বাংলার স্বার্থে, রাজ্যগুলোর স্বার্থে এসেছি একা। বিরোধী দলগুলির আর কেউ আসেনি। আমি পরিষ্কার বলছি, আপনারা বাজেটে আমাদের বঞ্চনা করেছেন। আপনারা বাংলার সমস্ত উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছেন। আপনারা বিরোধী দলকে কোনও সুযোগ দেন না। তিন বছর ধরে ১০০ দিনের কাজ বন্ধ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা বন্ধ, গ্রামীণ রাস্তা প্রকল্প বন্ধ, সমস্ত কিছু বন্ধ করে রেখেছে। এমনকী ফুড সাবসিডি পর্যন্ত দেয় না। আমরা গত বছর পর্যন্ত ১ লক্ষ ৭১ হাজার কোটি টাকা পাই। এই বাজেটেও কিছু নেই, শুধু জ়িরো। এইটুকু বলার সাথে সাথেই আমার মাইকটা বন্ধ করে দিল।'
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'তখন আমি বললাম, বিরোধীদের পক্ষ থেকে শুধুমাত্র আমি একা এসেছি। আপনাদের তো এতে খুশি হওয়া উচিত। আপনারা শুধু আপনাদের দলের লোকেদের বলার সময় দিচ্ছেন। আর আমি বলতে শুরু করতেই আমার মাইক বন্ধ করে দিলেন? আপনাদের এই বঞ্চনা আমি মানি না। আমি চললাম।’