১ জন শিক্ষকেই টিমটিম চলছে মালদার স্কুল, স্যারের অভাবে ছাত্ররাই নিচ্ছে ক্লাস
হিন্দুস্তান টাইমস | ২৮ জুলাই ২০২৪
মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে অবস্থিত গাংনদিয়া বাংরুয়া মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ওই কেন্দ্রটিতে পড়ানো হয়। তাতে মোট ৮১ জন পড়ুয়া রয়েছে। কিন্তু, স্কুলের অবস্থা খুবই খারাপ। শিক্ষকের অভাবে ধুঁকছে স্কুলটি। কারণ এই স্কুলে রয়েছে একজন মাত্র শিক্ষক। অবস্থা এতটাই খারাপ যে শিক্ষকের অভাবে পড়ুয়াদেরকেই নিতে হচ্ছে ক্লাস। এই অবস্থায় স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ না হলে আগামী দিনে স্কুলটিও বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন অভিভাবকরা।
উল্লেখ্য, এই স্কুলে যে একজন মাত্র শিক্ষক রয়েছে তাঁকে ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি সামলাতে হয় প্রশাসনিক দায়িত্ব। চারটি শ্রেণির পড়ুয়াদের ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি মিড ডে মিলের বাজার ও অফিসের সমস্ত কাজ সামলাতে হয় প্রধান শিক্ষককে। ফলে তিনি একটি ক্লাস নিতে গেলে অন্য ক্লাস ফাঁকা থাকছে। কারণ কোনওভাবেই তা একা শিক্ষকের জন্য সম্ভব নয়। এই অবস্থায় স্কুলে কেন শিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকরা। ফলে শিক্ষক না থাকার জন্য পড়ুয়াদের পঠনপাঠনে সমস্যা হচ্ছে তেমনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ নিয়েও থেকে যাচ্ছে প্রশ্নচিহ্ন। দুশ্চিন্তায় থাকতে হচ্ছে অভিভাবকদের। আর এই কারণে স্কুলেরই উঁচু ক্লাসের পড়ুয়ারা মাঝেমধ্যে ছোটদের ক্লাস নিয়ে থাকে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এই স্কুলটির পথচলা শুরু হয়েছিল ২০০১ সালে। প্রথমে স্কুলটিতে ৬ জন শিক্ষক ছিলেন। ২০০৩ সালে স্কুলটি শিক্ষা দফতরের অনুমোদন পেলে দু'জন শিক্ষকের বেতন চালু হয়। এরপর বাকি শিক্ষকদের বেতনও চালু হয়ে যায়। পরে এক শিক্ষক মারা যান। বাকি চার জন শিক্ষক একে একে অবসর নেন। কিন্তু, শিক্ষকরা অবসর নিলে স্কুলটিতে তারপর থেকে নতুন কোনও শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। ২০২২ সাল থেকে স্কুলটিতে মাত্র শিক্ষক রয়েছেন।এছাড়াও স্কুলে কোনও গ্রুপ ডি কর্মী নেই। এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাহানুল হক বলেন, ‘আমাকে পড়ানোর পাশাপাশি সমস্ত কাজ করতে হয়। খাতায় কলমে ৮১ জন পড়ুয়া থাকলেও নিয়মিত আসে ৩০-৩৫ জন পড়ুয়া। শিক্ষকের অভাবের জন্যই ছাত্ররা আসে না। শিক্ষক চেয়ে ব্লক, জেলা ও রাজ্যে আবেদন করেছি। কিন্তু, কোনও ফল হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গ্রামে স্কুল হওয়ায় সকলের আনন্দের শেষ ছিল না। তবে বর্তমানে ছাত্র থাকলেও একজন শিক্ষক দিয়ে কোনওভাবে টিম টিম করে চলছে স্কুলটি। যেকোনও সময় স্কুলটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।