বেলিয়াবেড়া ব্লকের নয় কিমি রাস্তা বেহাল, নিত্য দুর্ঘটনার শিকার মানুষ
বর্তমান | ২৮ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, মহাপাল: ধীরগতিতে একটি টোটো যাচ্ছিল। কিছুটা যাওয়ার পর সেটি উল্টে যায়। রাস্তায় ধারে ছিটকে পড়ে আরোহী সহ তিনজন। এই দৃশ্য বেলিয়াবেড়া ব্লকের গোয়ালমারা থেকে মহাপাল যাওয়ার রাস্তায় নিত্যদিনের সঙ্গী। প্রায় ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তা দিয়ে সারাদিনে অসংখ্য গাড়ি, বাস, বাইক যাতায়াত করে। কিন্তু গোটা রাস্তা খানা খন্দে ভর্তি। রাস্তায় দেড় ফুট পর্যন্ত গভীর গর্ত হয়েছে। গ্রামবাসীদের কথায়, ভোট আসে, ভোট যায় কিন্তু রাস্তার হাল ফেরে না। স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও লাভ হয়নি। এই রাস্তা দিয়ে বালি বোঝাই বড় লরি, ডাম্পার যাতায়াত করে। এর ফলে দ্রুত রাস্তা ভেঙে গিয়েছে। বর্ষায় বাইক নিয়ে তো দূরের কথা, সাইকেল নিয়েও যাতায়াত করতে পারছে না সাধারণ মানুষ। সমস্যায় পড়ছে একাধিক গ্রামের স্কুল পড়ুয়া।
ওই এলাকার বাসিন্দা সোনু পাত্র বলেন, এ তো চাঁদের রাস্তা। বর্ষায় গর্তগুলিতে জল জমে যায়। এর ফলে একেবারে যাতায়াত করা যায় না। একটু অসতর্ক হলে দুর্ঘটনা নিশ্চিত। রোজই দুর্ঘটনা ঘটে। বাস যাওয়ার সময়ে একদিকে হেলে পড়ে। যে কোনও দিন বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। প্রসঙ্গত, জেলাজুড়ে রাস্তা সংস্কারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে রাস্তা সংস্কার করছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই জেলার বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা সংস্কারের কাজ হয়েছে। এতে উপকৃত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পথশ্রী-রাস্তাশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে বহু রাস্তার সংস্কার হয়েছে। শুধু ঝাড়গ্রাম জেলায় ১৫৮টি রাস্তার সংস্কার হবে। এতে খরচ হবে প্রায় একশো কোটি টাকা। কিন্তু গোয়ালমারা থেকে মহাপাল যাওয়ার রাস্তার বেহাল দশা। সেই রাস্তা সংস্কারে কোনও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। অভিযোগ, এই রাস্তাটি সংস্কারের কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। ৫০ থেকে ৬০টি গ্রামের মানুষ এই রাস্তা ব্যবহার করে। অনেকেই বেলিয়াবেড়া ব্লক অফিস অথবা গোপীবল্লভপুর যেতে এই রাস্তা ব্যবহার করে। এছাড়া বহু রুটের বাস এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। উল্লেখযোগ্যভাবে, রাস্তার হাল খারাপ হওয়ায় গ্রামে যেতে পারে না অ্যাম্বুলেন্স। এরফলে রোগী ও রোগীর পরিজনদের সমস্যায় পড়তে হয়। ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যেতে এই রাস্তাই ব্যবহার করা হয়।
মহাপাল এলাকার বাসিন্দা বাসুদেব মণ্ডল বলেন, ১০ মিনিটের রাস্তা যেতে সময় লাগে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট। ১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় গতিবেগে বাইক, গাড়ি যাতায়াত করে। প্রশাসনকে বহুবার জানিয়েছি, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। এই রাস্তার সংস্কার না হলে লাগাতার আন্দোলন শুরু হবে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি চিন্ময়ী মারান্ডি বলেন, বিষয়টি নজরে এসেছে। দ্রুত মানুষের সমস্যার সমাধান করব।