• বাবা ও নাবালক ছেলেকে তালাবন্দি, আত্মহত্যা, ধৃত ছেলে সহ পাওনাদার  
    বর্তমান | ২৮ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কাঁথি: পাওনা ছিল চার লক্ষ টাকা। সেই টাকা না পেয়ে নাবালক ছেলে সহ এক ব্যক্তিকে একপক্ষকাল আটকে রাখা এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে বাবা ও ছেলেকে গ্রেপ্তার করল খেজুরি থানার পুলিস। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতদের নাম বলাইচাঁদ সাউ ও বিশ্বজিৎ সাউ। তাদের বাড়ি খেজুরির কৃষ্ণনগর গ্রামে। শুক্রবারই কৃষ্ণনগরে বন্ধু বলাইয়ের বাড়িতে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা নিমাই নন্দীর (৪৫)। তিনি বেশ কয়েকবছর ধরে হেঁড়িয়ার উদাখালি বাজারে ভাড়াবাড়িতে ১০ বছরের ছেলেকে নিয়ে থাকতেন। এদিকে শনিবার ধৃতদের কাঁথি মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তদন্তের স্বার্থে তিনদিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দেন। সংশ্লিষ্ট হেঁড়িয়া ফাঁড়ির আইসি শেখ আসিফউদ্দিন বলেন, ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। 


    উল্লেখ্য, নিমাই বিভিন্ন জনের কাছ থেকে নানা অছিলায় টাকাপয়সা ধারদেনা করতেন। কাজ পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা তুলতেন। টাকা শোধ করতেন না। কিছু দিয়ে আর দিতেন না। প্রয়োজনে গা-ঢাকা দিতেন। এভাবেই তাঁর দিন চলত। এদিকে এলাকায় থাকার সূত্রে বলাইয়ের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ গড়ে ওঠে। দু’জনের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়। বেশ কয়েকমাস আগে বলাইয়ের কাছ থেকে চার লক্ষ টাকা ধার নেন নিমাই। কিন্তু বলাই বহুবার সেই টাকা চাওয়ার পরও নিমাই তা দিচ্ছিলেন না। দিন পনেরো আগে কোনও এক অছিলায় নিমাইকে বাড়িতে ডাকে বলাই। নিজের ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বলাইয়ের বাড়িতে যান নিমাই। তারপর বাবা ও ছেলেকে নিজের বাড়িতে একটি ঘরে তালা দিয়ে আটকে রাখে বলাই। এমনকী নিমাইয়ের কাছে থাকা মোবাইল ফোন ও টাকা পয়সা নিয়ে নেয়। খাওয়ার সময় শুধু খেতে দিত আর বাকি সময়টা তালা মেরে রাখত বাবা ও নাবালক ছেলেকে। মোবাইল ফোন ও টাকাপয়সা নিয়ে নেওয়ায় কোনওকিছু করতে পারছিলেন না নিমাই। দিনের পর দিন এভাবে চলতে চলতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাতে ছেলেকে নিয়ে যে ঘরে ঘুমিয়েছিলেন, সেখানেই কড়িকাঠে গামছার ফাঁসে ঝুলে পড়েন নিমাই। পুলিস দেহটি উদ্ধার করে। উদ্ধার করা হয় নাবালককেও। তদন্তকারী অফিসার পীযূষ মাইতি এবিষয়ে একটি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেন। শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয় বলাইচাঁদ ও বিশ্বজিৎকে।  নিমাইয়ের ছেলে হেঁড়িয়ার একটি বেসরকারি স্কুলে পড়াশোনা করে। নাবালককে উদ্ধার করার পর পুলিস তাকে সেখানেই পাঠিয়েছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)