• ২ কোটির জমি প্রতারণা: ডিএম অফিসে তলব কাঁথি পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলার ও কর্মীকে
    বর্তমান | ২৮ জুলাই ২০২৪
  • শ্রীকান্ত পড়্যা, কাঁথি: কাঁথি শহরে প্রায় দু’কোটি টাকা মূ঩ল্যের জমি নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলার ও পুরসভার এক কর্মীকে তলব করা হল। ২৯ জুলাই, সোমবার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) অফিসে তাঁদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত কাঁথি পুরসভার এক তৃণমূল কাউন্সিলার অতনু মান্না এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ পুরসভার কর্মী কাবুল বেরাকে ডাকা হয়েছে। ওইদিন অভিযোগকারী তথা জমির মালিক আশিস মাইতিও হাজির থাকবেন। অন্যের নামে থাকা প্রায় দু’কোটি টাকা মূল্যের ৭৭ শতক জমি প্লট করে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনায় কাঁথি পুরসভার ওই তৃণমূল কাউন্সিলার ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে আগেই অভিযোগ দায়ের হয়। নবান্ন থেকে এই ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেইমতো ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।


    কাঁথি পুরসভার কাউন্সিলার অতনু গিরি বলেন, সোমবার ডিএম অফিসে যাব। তাঁর দাবি, জমি বিক্রির সঙ্গে তিনি যুক্ত নন। তবে বিষয়টি নিয়ে সমস্যা তৈরি হওয়ায় তিনি কয়েকবার আলোচনায় বসেছেন।


    প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা সহ জমি মাফিয়া চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোয় আশিসবাবুকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। দেশপ্রাণ ব্লকের নামালডিহার ওই বাসিন্দা আপাতত গাঢাকা দিয়ে আছেন। কাঁথি থানাতেও অতনু মান্না ও তাঁর শাগরেদদের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে। পুলিস সেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। পাশাপাশি আশিসবাবু ওই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যপালের কাছেও অভিযোগ জানিয়েছিলেন। সেই সূত্রে ভূমি দপ্তরের সচিব গোটা ঘটনার তদন্ত করে জেলাশাসককে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।


    ২০১০ সালে কাঁথি পুরসভার ৭নম্বর ওয়ার্ডে শেরপুর মৌজায় প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা দিয়ে ৭৭ শতক জমি কিনেছিলেন আশিসবাবু। তিনি চিংড়ি মাছের ব্যবসা, মাছের খাবার এবং বরফকলের মালিক। একসময় তাঁর সংস্থায় মোট ৮৫জন কর্মচারী ছিলেন। ওই জমি কেনার পর ওই ব্যবসায়ী জানতে পারেন, সেখানে যাতায়াতের রাস্তা নেই। ২০১১সালে তাঁর বাবা দুর্ঘটনায় মারাত্মক জখম হন। চিকিৎসায় বিপুল টাকা খরচ হয়। মেয়ের চিকিৎসার জন্যও অনেক টাকা খরচ হয়। এই পরিস্থিতিতে ওই জায়গা বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন।  ২০২০ সালে আশিসবাবু ওই জমি বিক্রি করার জন্য কাউন্সিলারের সঙ্গে কথা বলেন। কাউন্সিলারের পরামর্শে তাঁর ঘনিষ্ঠ কাবুল বেরাকে ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ দেন। শর্ত ছিল, জমি বিক্রির পর আশিসবাবুকে টাকা দেওয়া হবে। তারপর অভিযুক্ত কাবুল আবার তাঁর স্ত্রী এবং কাঁথি পুরসভার আর এক কর্মীকে ওই জমির পাওয়ারনামা রেজিস্ট্রি করে দেন। পরবর্তীতে ওই চক্র সই জালিয়াতি করে দু’কোটি টাকার বেশি দামে প্লট করে পুরো জমি বিক্রি করে দিয়েছে। আশিসবাবু কানাকড়িও পাননি। তিনি স্থানীয় কাউন্সিলার অতনু ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে কাঁথি থানায় এফআইআর করেন। 
  • Link to this news (বর্তমান)