• ধৃত ৬, ডাকাতির পর সমবায় খুললেও আতঙ্ক, অভিযুক্তের বিজেপি যোগ ঘিরে গাজোলে তোলপাড়
    বর্তমান | ২৮ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, পুরাতন মালদহ: গাজোলের কৃষ্ণপুর সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি লিমিটেডের ডাকাতিতে আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতদের নাম ইমারুল কায়েস (২৫) ওরফে টাইটেন এবং বাদল আলি (১৯)। তাদের দু’জনেরই বাড়ি চাঁচলে। শুক্রবার রাতে চাঁচল থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এনিয়ে ঘটনার দিন থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত মোট ছ’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস।


    ডাকাতির ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। পুলিস সূত্রে খবর, ধৃত সমীর মণ্ডল জখম ক্যাশিয়ারের দূর সম্পর্কের ভাই। তার বাড়ি ওই সমবায়ের পিছনে। সমীরের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। সেজন্য সে ভিনরাজ্যেই বেশি থাকত। ডাকাতির কয়েক দিন আগে সে গ্রামে এসেছিল। সেখান থেকেই পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে স্থানীয়দের দাবি। স্থানীয় তৃণমূল সদস্য ও গ্রামবাসীদের কথায়, গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে প্রচার করেছিল সমীর। এলাকায় বিজেপির ফ্লেক্স টাঙাতেও দেখা গিয়েছিল তাকে। শুধু তাই নয়, ধৃত সমীর ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওই গ্রামে বিজেপির প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়ে পরাজিত হয়েছিল। 


    কৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য তৃণমূলের লতিকা সরকারের স্বামী রাজীব সরকার বলেন, অভিযুক্ত সমীর বিজেপির হয়ে ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড়িয়ে হেরেছিল। বিজেপির বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকত। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক অভিযুক্তের এক আত্মীয়ের দাবি, ২০১৮ সালে হারার পর তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা সমীরকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে। তারপর থেকেই সে মাঝেমধ্যে অন্যায় কাজ করত। ডাকাতির সঙ্গে দলের কর্মীর নাম জড়িয়ে যাওয়ায় জোর অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির। বিজেপির উত্তর মালদহের সহ সভাপতি মিলন দাস বলেন, বিজেপির কর্মী, সমর্থকরা দলের হয়ে প্রচার করতেই পারে। কিন্তু পরে সে খারাপ কাজ করবে কি না, কীভাবে আগাম জানা যাবে? দল থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে শীঘ্রই আলোচনা করা হবে। গাজোল থানার এক আধিকারিক জানান, অভিযুক্ত সমীর মণ্ডল একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে শুনেছি। তবে কোনও নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত কি না, খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।


    আতঙ্কে শনিবারও সমবায়ে উপভোক্তাদের উপস্থিতি ছিল কম। সমিতির ম্যানেজার সন্তোষকুমার সরকার বলেন, শুক্রবার বিকেলেও সমিতিতে পুলিস এসেছিল। আমরা বলেছি, সমিতি থেকে মোট ৫ লক্ষ ৯২ হাজারের বেশি টাকা নিয়ে গিয়েছে। সেগুলি ফেরত পেলে ভালো হয়। ডাকাতির ঘটনায় পুলিস যেভাবে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করছে তাতে খুশি সমবায় কর্তৃপক্ষ। গাজোল থানার এক আধিকারিকের মন্তব্য, আগে ৪ জনকে ধরা হয়েছিল। বাকিরা পালিয়ে গিয়েছিল। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে চাঁচল থেকে আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)