এই সময়, ব্যারাকপুর: কুখ্যাত গ্যাংস্টার সুবোধ সিংকে ফের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল ব্যারাকপুর মহকুমা আদালত। শনিবার বেলা তিনটে নাগাদ সাত দিনের পুলিশ হেফাজত শেষে কালো প্রিজন ভ্যানে চাপিয়ে সুবোধকে কোর্টে আনা হয়। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল আদালত চত্বর। এ দিনও হেলমেট পরিয়ে সুবোধকে আনে পুলিশ।গ্যাংস্টারের পরনে ছিল ব্র্যান্ডেড টি শার্ট, কালো জিন্স। হাসিখুশি মেজাজেই দেখা যায় তাকে। যদিও সংবাদমাধ্যমের কোনও প্রশ্নেরই উত্তর দেয়নি সুবোধ। সুবোধকে ঘিরে যাতে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সে কথা মাথায় রেখে আগের দিনের মতোই নিরাপত্তার কড়া বন্দোবস্ত রেখেছিল ব্যারাকপুর কমিশনারেট।
আদালত ভবনের পাশের দু’টি বিল্ডিং থেকেও এদিন পুলিশকে দূরবিন হাতে নজরদারি করতে দেখা যায়। ১৫ জুন বেলঘরিয়ার রথতলা মোড়ে বিটি রোডে ব্যবসায়ী অজয় মণ্ডলের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে পালায় দুই আততায়ী। গাড়ি বুলেট প্রুফ হওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান অজয়। এরপর তাঁর কাছে হুমকি ফোন আসে। গুলি চালানো ও হুমকি ফোনের তদন্তে উঠে আসে বিহারের বেউর জেলে বন্দি সুবোধের নাম।
ইতিমধ্যে সিআইডি রানিগঞ্জে একটি ডাকাতির তদন্তে সুবোধকে বেউর জেল থেকে আসানসোলে ট্রানজ়িট রিমান্ডে নিয়ে আসে। তারপর বেলঘরিয়ায় গুলি-কাণ্ডে ব্যারাকপুর কমিশনারেট সুবোধকে ট্রানজ়িট রিমান্ডে নেয়। আদালতে পেশ করে প্রথমে সাত দিনের হেফাজতে পেয়েছিল পুলিশ। তারপর এ দিন ছিল কোর্ট প্রোডাকশন।
সরকারি আইনজীবী যদুনাথ ঘোষ আদালতে বলেন, যে দুই আততায়ী মোটরবাইকে করে এসে গুলি চালিয়ে পালিয়েছিল, তারা এখনও অধরা। উদ্ধাক হয়নি আগ্নেয়াস্ত্রের। ফলে সুবোধকে আরও জেরার প্রয়োজন রয়েছে। অন্য দিকে, সুবোধের আইনজীবী কমলজিৎ সিং আদালতে বলেন, তাঁর মক্কেল ইতিমধ্যেই সাত দিনের পুলিশ হেফাজতে ছিল। সে তদন্তে সহযোগিতাও করেছে। তা ছাড়া মক্কেল অসুস্থ।
দু’পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে বিচারক প্রার্থনা বন্দ্যোপাধ্যায় সুবোধকে ছ’দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের রায় দানের পর এ দিন বিকেলে ফের প্রিজন ভ্যানে চাপিয়ে সুবোধকে বেলঘরিয়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই আবার সুবোধকে জেরার প্রস্তুতি শুরু করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, যারা ব্যবসায়ীর গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল, তাদের পুলিশ চিহ্নিত করেছে। এখন তল্লাশি চলছে।