• ঝাড়গ্রামে প্রবেশ করল গজরাজ রামলাল, রবিবাসরীয় সকালে তাণ্ডব চালিয়ে ফিরল বনে
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২৮ জুলাই ২০২৪
  • আজ, রবিবার সাতসকালে ঝাড়গ্রামের রাস্তায় দাপিয়ে বেড়াল এক দাঁতাল হাতি। যে ঘটনাকে ঘিরে আলোড়ন পড়েছে ঝাড়গ্রামের নানা এলাকায়। হাতির কাণ্ডকারখানা দেখতে রাস্তায় উপচে পড়েছিল মানুষের ভিড়। আর সকাল থেকে মানুষজন রাস্তায় কাটানোর পর শেষমেশ ক্ষান্ত হলেন। তবে গজরাজ রামলাল আজ সকালে লোকালয়ে চলে এসে তাণ্ডব করবে সেটা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। গজরাজ রামলালের যে খিদে পেয়েছিল সেটা পরে সকলেই বুঝতে পারেন। তাই তাকে কেউ ঢিল বা অন্য কিছু দিয়ে আক্রমণ করেনি। নিজের পেটপুজো হয়ে যেতেই দেখা যায় ল্যাজ নেড়ে দুলকি চালে হেঁটে সে গন্তব্যের দিকে রওনা হয়।

    এদিকে সাতসকালে ঝাড়গ্রাম শহরে প্রবেশ করল দাঁতাল হাতি। তাকে ঘিরে রীতিমতো শহরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ঝাড়গ্রাম শহরের শ্রীরামপুর, বেনাগেড়িয়া, সুভাষপল্লী, পুরাতন ঝাড়গ্রাম–সহ একাধিক এলাকায় দীর্ঘক্ষণ তাণ্ডব চালায় গজরাজ রামলাল। এই রামলালকে দেখতে যেমন রীতিমতো শহরের মানুষের মধ্যে উৎসাহ দেখা দিয়েছিল তেমনই আতঙ্ক ছড়িয়েছে শহরে। হাতি রাস্তায় দাপিয়ে বেড়ালেও দেখা গেল না বন দফতরের কোনও কর্মীকে। ওই হাতিকে দেখতে শয়ে শয়ে লোক নামে রাস্তায়। তখন কোনও বড় দুর্ঘটনা ঘটতেই পারত বলে মনে করছেন অনেকে। ঝাড়গ্রামে গত দেড় মাসে হাতির হানায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। খাবারের সন্ধানে এসেই ঘর–বাড়ি ভাঙা থেকে ক্ষতি করছে ফসলের।


    অন্যদিকে ঝাড়গ্রাম শহরে হাতির প্রবেশ ঠেকাতে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে ব্যাটারি চালিত বিদ্যুতের বেড়া তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও শহরে হাতি ঢোকা বন্ধ হয়নি। এমনকী রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়েছে ফেন্সিং বলে অভিযোগ। চলতি বছরে ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, হাতির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই যাতে তারা বন থেকে বেরোতে না পারে তার জন্য ফেন্সিং ভাল করে দিতে হবে। তারপরই হাতি রুখতে পরিখা কাটা এবং ফেন্সিং করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী সেটা বাস্তবায়িত হলেও সমস্যা মেটেনি। আজ, রবিবারসরীয় সকালে দেখা গেল, গৃহস্থের বাড়ির লাগোয়া শাটার ভেঙে চাল বের করে খেয়ে আবার ফিরে গেল গজরাজ।

    হাতির প্রবেশ আটকাতে ২০২৩ সালে ব্যাটারি চালিত বিদ্যুতের ফেন্সিং করা হয়েছিল। দুবরাজপুর থেকে শুরু করে কুটুমগেড়িয়া, উত্তর মুরাকাটি, বালিজুড়ি, কইমা, ফুলবেড়িয়া, ঘোড়াধরা এবং লালবাজার পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার বেড়া করা হয়েছিল। খরচ হয়েছিল ৪৫ লক্ষ টাকা। আর কন্যাডোবা, শ্রীরামপুর শহরের প্রান্তে ৪ কিলোমিটার পরিখা খননের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল ২৫ লক্ষ টাকা। ঝাড়গ্রামের বন বিভাগের এক অফিসার বলেন, ‘অনেক সময় গাছের ডাল পড়ে ফেন্সিং নষ্ট হয়। দু’বছর এটা রক্ষণাবেক্ষণ করার কথা আছে। তার যাতে চুরি করা না হয় সেই জন্য আমরা সচেতন করছি।’ তবে শহরের মধ্যে এভাবে হাতি ঢুকে পড়ার ঘটনায় শ্যামলাল মণ্ডল এবং পদ্মাবতী মণ্ডল বলেন, ‘‌এই ঘটনায় আমরা খুব আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি। ক্ষতি হয়েছে। এমন ঘটনা আগে ঘটেনি।’‌
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)