ঝাড়গ্রামে শ্রাবণী মেলা, পর্যটন ও লোকসংস্কৃতি উৎসব ঘিরে উন্মাদনা
বর্তমান | ২৯ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্রাম: রবিবার ঝাড়গ্রামে শুরু হল শ্রাবণী মেলা, লোকসংস্কৃতি ও পর্যটন উৎসব। মেলাকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষ ও পর্যটকদের উন্মাদনা তুঙ্গে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রথমদিন থেকেই মেলায় পর্যটকদের ঢল নামে। এদিন ২০তম বর্ষের মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা, জেলা পরিষদের সভাধিপতি চিন্ময়ী মারাণ্ডি, পুরসভার চেয়ারম্যান কবিতা ঘোষ সহ জনপ্রতিনিধিরা। অফিসার্স ক্লাব প্রাঙ্গণে ১৮আগস্ট পর্যন্ত মেলা চলবে। মেলা চলাকালীন ২০দিন ব্যাপী নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিটি অনুষ্ঠানে মানুষের ঢল নামবে বলে আশাবাদী উদ্যোক্তারা। মেলায় ঘুরতে আসা সাধারণ মানুষ ও পর্যটকদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদিন শুধু জেলা নয়, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা রাজ্য থেকেও বহু মানুষ মেলায় আসেন। মেলা কমিটির সভাপতি রঞ্জিত সেন, প্রসূন ঘোষ, মলয় খান বলেন, সাধারণ মানুষ এই মেলার জন্য সারাবছর অপেক্ষা করে থাকেন। এবছর সমস্ত ভিড়ের রেকর্ড ছাপিয়ে যাবে। সকলকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। মেলা কমিটির আরও দুই সভাপতি প্রশান্ত গিরি, সব্যসাচী সাঁতরা বলেন, অনেক ছোট ব্যবসায়ী প্রতি বছর মেলায় আসেন। বিপুল পরিমাণে বিক্রিও হয়। মেলা এবারও জমে উঠেছে।
প্রসঙ্গত, ২০০১সালের দুর্গাপুজোর আগে রঘুনাথপুর দুর্গাপুজো কমিটির সদস্যরা একসঙ্গে রাস্তায় চাঁদা তুলতে বেরিয়েছিলেন। রাজ্য সড়কে গাড়ি থামিয়ে চাঁদা তোলা হচ্ছিল। অভিযোগ পেয়ে ঝাড়গ্রাম থানার পুলিস ক্লাবের তিন সদস্যকে আটক করেছিল। খবর পেয়ে ক্লাবের সদস্যরা দল বেঁধে ঝাড়গ্রাম থানায় যান। ঝাড়গ্রাম থানার তৎকালীন ওসি দীপক সরকার ক্লাবের সদস্যদের উদ্দেশে সমাজের স্বার্থে ভালো ভাবমূর্তি তৈরিতে নজর দিতে বলেছিলেন। এরপর ক্লাবের দুই সক্রিয় সদস্য গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রয়াত সমীর মালাকারের চেষ্টায় মেলা শুরু হয়। সময়ের সঙ্গে মেলার জনপ্রিয়তা ও আয়তন বাড়তে থাকে। সমীরবাবুর মৃত্যুর পর থেকে মেলা পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন রাজকুমার বেরা। তিনি বলেন, মেলা কমিটির সদস্যরা প্রচুর পরিশ্রম করেন। তাই সুষ্ঠুভাবে মেলা পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম বছর থেকেই ঝাড়গ্রাম শহরে ভালো সাড়া ফেলে এই মেলা। এবছর মেলায় ৩০০টির বেশি স্টল রয়েছে। মেলা কমিটির সদস্যরা সারা বছর রক্তদান সহ নানা সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন। একইসঙ্গে মানুষের সমস্যায় সকলে একত্রিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। মেলা কমিটির তিন সম্পাদক অশোক ভট্টাচার্য, চন্দন শতপতি, অভিরূপ দাস বলেন, শহরবাসীর ভালোবাসা পাওয়ায় মেলা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে। একতাই আমাদের কমিটির মূলমন্ত্র। এবছর ৭৫বছর পূর্তি হিসেবে বড় করে দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হচ্ছে। পুলিস-প্রশাসন সর্বদা পাশে থাকায় সুষ্ঠুভাবে মেলার আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে। ঝাড়গ্রামে শুরু হল শ্রাবণী মেলা, লোকসংস্কৃতি ও পর্যটন উৎসব।-নিজস্ব চিত্র