• ঝাড়গ্রাম শহরে ‘প্রভাতফেরি’ রামলালের, ঝুঁকি নিয়ে সেলফি
    বর্তমান | ২৯ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্রাম: শহরের বুকে ‘প্রভাতফেরি’ করল রামলাল। পিছনে ছুটল শতাধিক মানুষ। এদিন সকালে জঙ্গলমহলের সবচেয়ে জনপ্রিয় হাতির সঙ্গে কেউ তুললেন ‘সেলফি’, কেউ লেজ ধরে দিল টান। রবিবার সকালে ঝাড়গ্রাম শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বেনেগেড়িয়া এলাকায় রামলাল ঢুকে পড়ে। এদিন প্রায় দু’ঘণ্টা শহর পরিক্রমা করে দাঁতালটি। তবে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। এদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই অনেকে দেখেন, রামলাল দাঁড়িয়ে আছে দুয়ারে। মূলত খাবারের সন্ধানে জঙ্গল থেকে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে হাতিটি। তবে, বনদপ্তরের চেষ্টায় সকাল ৮টা নাগাদ রামলালকে জঙ্গলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। 


    ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম সংবাদমাধ্যমে বলেন, শহরে একটি হাতি ঢুকে পড়েছিল। সেটিকে সুরক্ষিতভাবে শহরের বাইরে বের করে দেওয়া হয়েছে। হাতিটি শহরের মধ্যে তেমন কোনও ক্ষয়ক্ষতি করেনি। হাতিটি শান্ত মেজাজে রয়েছে। আমি অনুরোধ করব, হাতিটিকে কেউ উত্ত্যক্ত করবেন না। 


    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে ঘড়ির কাঁটায় তখন সকাল সাড়ে ৬টা। ঝাড়গ্রাম শহর সংলগ্ন শ্রীরামপুরের দিক থেকে রামলাল বেনাগেড়িয়া হয়ে শহরে ঢুকে পড়ে। সেখান থেকে সটান পৌঁছে যায় ফনির মোড়ে। সেই সময় রামলালের পিছনে কয়েক হাজার মানুষ ছিল। এরপর টেলিফোন এক্সচেঞ্জ অফিসের রাস্তায় চলে যায়। একটি বেসরকারি স্কুলের সামনে পর্যন্ত কার্যত প্রভাতফেরি চলে। সেখান থেকে রামলাল কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড, তরুছায়ার মোড় হয়ে সটান সেরিকালচার দপ্তরের পাঁচিল ভেঙে অফিসে ঢুকে পড়ে। অফিসের বাগানে বেশকিছু সময় কাটায়। তারপর সেখান থেকে বাইরে বেরিয়ে আসতেই বহু মানুষ ছবি তোলে। রামলাল অফিস থেকে বেরিয়ে ঝাড়গ্রাম শহরের কাঁটাবাড়ি এলাকায় অবস্থিত হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে ঢুকে পড়ে। সেখানে বেশকিছুটা সময় ঘুরপাক খায়। 


    রামলালের খবর পেয়ে এলাকায় আসেন বনদপ্তরের আধিকারিকরা। একইসঙ্গে আসে ঐরাবত গাড়ি। বনদপ্তরের চেষ্টায় চুয়াড় বনের জঙ্গল হয়ে কলাবনীর জঙ্গলে পাঠানো হয় রামলালকে। 


    বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু ঝাড়গ্রাম ডিভিশন এলাকায় ৮০টি হাতি আছে। হাতির তাণ্ডবে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া সন্ধ্যার পর আতঙ্কে বাড়ি থেকে বেরতে পারছেন না সাধারণ মানুষ। বিশেষ ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি চালানো হচ্ছে। এদিন বাড়ির সামনে দাড়িয়ে বেনেগেড়িয়া এলাকার বাসিন্দা সুদেব মণ্ডল বলেন, সকালে চিৎকার চেঁচামেচি শুনে ঘুম ভেঙে যায়। বাহিরে আসতেই দেখি রাস্তায় রামলাল দাঁড়িয়ে আছে। খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তবে দেখলাম বহু মানুষ হাতির পিছনে যেন মর্নিং ওয়াক করছে। বাড়ির শিশুদের খুব ভালো লেগেছে। 


    এদিন ঝাড়গ্রামে বেড়াতে এসেছিলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথির বাসিন্দা শ্যামল ঘোষ। তিনি বলেন, হোটেল থেকে জানতে পারি রাস্তায় হাতি বেরিয়েছে। খুব শান্ত স্বভাবের হাতিটি। আগে খবরের কাগজে ওকে নিয়ে অনেক লেখা পড়েছি। এবার দেখতে পেলাম। দারুণ অভিজ্ঞতা হল।
  • Link to this news (বর্তমান)