• বিশ্বনাথের শেষযাত্রায় মিলল সব দল প্রয়াত নেতাকে চিরবিদায় জানাল বালুরঘাট
    বর্তমান | ২৯ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, পতিরাম: নবীন, প্রবীণ থেকে শুরু করে দলমত নির্বিশেষে হাজির সবাই। রবিবার সকালে বালুরঘাট শহরে প্রাক্তন কারামন্ত্রী বিশ্বনাথ চৌধুরীর দেহ পৌঁছনোর পর বাসভবন থেকে জেলা কার্যালয়, সব জায়গাতেই যেন স্বজন হারানোর শোক। চোখের জলে সবাই শেষশ্রদ্ধা জানালেন প্রিয় নেতাকে। দুপুরে খিদিরপুর মহাশ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় প্রাক্তন মন্ত্রীর।


    তৃণমূল, বিজেপি, কংগ্রেস ও বামেদের সব শরিক দলের পক্ষ থেকে এদিন প্রাক্তন মন্ত্রীকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এছাড়া শহরের বহু ক্লাব, সংগঠন সহ নানা মহল থেকে রবিবার শেষযাত্রায় অংশ নিতে দেখা গিয়েছে। শোক মিছিলে পা মেলান আরএসপি রাজ্য সম্পাদক তপন হোড়, কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য, সুচেতা বিশ্বাস সহ রাজ্য ছাত্র-যুব নেতারা তপন হোড় বলেন, বিশ্বনাথ ও আমি একইসঙ্গে বালুরঘাট কলেজে পড়তাম। সেখানে ছাত্রজীবন থেকে এতদিন পর্যন্ত আমরা রাজনীতি করেছি। বিশ্বনাথ কঠোর পরিশ্রম করতে পারত। কলকাতা থেকে দেহ আসার পর বহু জায়গা থেকে আমাদের কর্মীরা পুষ্পস্তবক পাঠিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। বিশ্বনাথ চৌধুরীর অত্যন্ত কাছের নেত্রী ছিলেন প্রাক্তন পুর চেয়ারপার্সন সুচেতা বিশ্বাস। মন্ত্রী অসুস্থ হওয়ার পর থেকে কলকাতায় পাশে ছিলেন তিনি। সুচেতা বিশ্বাস বলেন, দাদা এভাবে চলে যাবেন কখনও ভাবিনি। 


    রবিবার সকাল সকাল পুষ্পস্তবক নিয়ে বিশ্বনাথবাবুর বাড়িতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের আরও প্রবীণ, নবীন নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ কৌশিক মাহাতর হাত দিয়ে পুষ্পস্তবক পাঠিয়েছেন।


    সুভাষ ভাওয়াল বলেন, বিশ্বনাথবাবু বামেদের বহু পুরনো নেতা। তাঁর প্রয়াণে সকলেই মর্মাহত। আমাদের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র আসতে পারেননি। কিন্তু আমাদের সর্বস্তরের নেতারা শ্রদ্ধা জানিয়েছি। 


    বিশ্বনাথ চৌধুরী প্রায় ৩৯ বছর বিধায়ক এবং ২০১১ সাল পর্যন্ত কারা ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ছিলেন। ২০১৬ সালে ফের বিধায়ক হন তিনি। বালুরঘাটে কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার স্থাপন থেকে নানা উন্নয়নের কারিগর ছিলেন বিশ্বনাথ। একদা বামদুর্গ বলে পরিচিত বালুরঘাটে দলের ছোট, বড় নেতার পাশাপাশি বিরোধী দলের নেতাদের প্রতি তাঁর সৌজন্য ছিল কল্পনাতীত। তাই এদিন জেলার প্রিয় নেতাকে শেষবারের মতো দেখতে মানুষের ঢল নামে। সাধনা মোড়ে পার্টি অফিসে লাইন দিয়ে কর্মীরা পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। বিশ্বনাথ চৌধুরী দীর্ঘদিন দলের রাজ্য সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে জেলা সম্পাদকের পদে ছিলেন তিনি। তাঁর পরিবর্ত বেছে নিতে শীঘ্রই দলে আলোচনা হবে বলে শীর্স্তরের নেতারা জানিয়েছেন।


    এদিন বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার থাকতে না পারলেও প্রতিনিধির মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। বিজেপির আরও একটি দল বিশ্বনাথের বাড়িতে গিয়েছিল। বিজেপির বালুরঘাট টাউন মণ্ডল সভাপতি সমীর প্রসাদ দত্ত বলেন, প্রয়াত মন্ত্রী আমাদের শহরের মানুষ। বালুরঘাটের আটবারের বিধায়ক। তাঁর প্রয়াণে আমরা  মর্মাহত। 
  • Link to this news (বর্তমান)