সঞ্জিত সেনগুপ্ত, শিলিগুড়ি : ফের ঝলসে উঠল রিচার ব্যাট। শিলিগুড়িকে গর্বিত করে আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চোখ জুড়ানো ব্যাটিং উপহার দিলেন শহরের গর্ব রিচা ঘোষ। রবিবার টি-টোয়েন্টির মহিলাদের এশিয়া কাপ ক্রিকেটের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ফেভারিট হিসেবেই ভারত মাঠে নেমেছিল। কিন্তু প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারত চাপের মধ্যে পড়ে যায়। এক সময় মনে হয়েছিল ভারত ১৫০ রানের গণ্ডি পেরোতে পারবে না। তখনই ঝলসে উঠল রিচার ব্যাট। স্মৃতি মান্ধানাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে শিলিগুড়ির মেয়ে ১৪ বলে ৩০ রানের একটি ঝলসানো ইনিংস উপহার দেন। যা ভারতের রানকে শেষ পর্যন্ত ১৬৫ তে পৌঁছতে সাহায্য করে। রিচার এই ইনিংসে শিলিগুড়ির ক্রিকেট মহল উচ্ছ্বসিত। কিন্তু রিচার এই বিধ্বংসী ব্যাটিং কাজে না আসায় হতাশ শিলিগুড়ি। সারা টুর্নামেন্টে দাপটের সঙ্গে জিতে এসেও ফাইনালে শেষ রক্ষা হল না। ভারতকে ৮ উইকেটে পরাজিত করে এশিয়া কাপ ঘরে তুলল শ্রীলঙ্কা।
ভারত জিতলে রিচার ব্যাটিংয়ে সাফল্য নিয়ে উচ্ছ্বাস বেশি হতো। তবু শহরের মেয়ের ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিক রান আসায় খুশি শিলিগুড়ির ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ ও প্রাক্তন ক্রিকেটাররা। সকলে মনে করেন প্রতিটি ম্যাচেই রিচা ক্রমশ ব্যাটিংয়ে নিজেকে মেলে ধরছেন। চাপের মুখে ব্যাট করতে নেমে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে বড় রান করাটা অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছেন রিচা। ও এখন দলের একজন নির্ভরযোগ্য হার্ড হিটার।
এবার এশিয়া কাপে আরব আমিরশাহীর বিরুদ্ধেই অনবদ্য ইনিংস খেলে ভারতকে ২০০ রানের গণ্ডি পার করে রেকর্ড গড়তে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন রিচা। সেদিন তাঁর অর্ধশত রান করার মধ্যদিয়ে রিচা ভারতের প্রথম উইকেটকিপার ব্যাটার হিসেবে এশিয়া কাপে এই রান করার রেকর্ড গড়েন। সেই ম্যাচে মাত্র ২৬ বলে কেরিয়ারের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে অর্ধশত রানও করেন। সেদিন ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে ক্যাপ্টেন হরমনপ্রীত রান আউট হন। বাকি পাঁচ বলে টানা পাঁচটি বাউন্ডারি মারেন রিচা।
ঋদ্ধিমানের কোচ জয়ন্ত ভৌমিক বলেন, এদিন ফের শিলিগুড়িকে আর একবার গর্বিত করল রিচা। বয়স কম, আরও ভালো খেলবে। ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটকে অনেকদিন সার্ভিস দেবে, আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। ওকে দেখে শিলিগুড়ির মেয়েরা অনুপ্রাণিত হবে। মেয়েরা ক্রিকেট মাঠে ভিড় বাড়াবে। ভারত জিতলে আনন্দটা আরও বেশি হতো।
যে ক্লাবে খেলে বড় হয়েছেন রিচা, সেই বাঘাযতীন অ্যাথলেটিক ক্লাবের ক্রিকেট সচিব হিন্দোল সেনগুপ্ত বলেন, ভারত জিতলে ভালো লাগত। রিচার ব্যাটিংয়ের পুরো আনন্দ করতে পারতাম। তবু আমরা গর্বিত রিচার জন্য। রিচার কাছে আমরা ধারাবাহিক এই পারফরম্যান্স আশা করি। ম্যাচে চোখ রিচার বাবার। - নিজস্ব চিত্র।