নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বাড়িটির রং উঠে গিয়েছে বহুকাল আগে। বিভিন্ন জায়গা থেকে চাঙর খসে পড়ছে। কোথাও কোথাও লোহার রড বেরিয়ে রয়েছে। স্তম্ভগুলির অবস্থা ঠিকঠাক নয়। তিনশোরও বেশি দোকান রয়েছে এই বাজারে।
মধ্য কলকাতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মার্কেট হল বউবাজার। এই বাড়িটি দীর্ঘকাল সংস্কার না হওয়ায় শোচনীয় অবস্থায় রয়েছে বলে অভিযোগ। একপ্রকার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই বাজারে ব্যবসা করতে বাধ্য হচ্ছেন দোকানদাররা। বাজারটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। জানা গিয়েছে, মালিক পক্ষ আগ্রহী থাকলেও আইনি জটিলতার কারণে বছরের পর বছর ধরে আটকে রয়েছে সংস্কার কাজ। অন্যদিকে বাজারটি বেসরকারি জায়গায় থাকার কারণে কলকাতা পুরসভাও হস্তক্ষেপ করতে পারছে না। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিার বিশ্বরূপ দে। কয়েক মাস আগে বউবাজার মার্কেট বিল্ডিংয়ের বাইরের দিকে দেওয়ালের একটি অংশ ভেঙে পড়ে। সকালবেলা তখন পুরোদমে কেনাকাটা চলছিল। ফলে এই ঘটনায় প্রবল আতঙ্ক ছড়ায়। সবমিলিয়ে বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট এবং নির্মলচন্দ্র দে স্ট্রিটের সংযোগস্থলে থাকা বউবাজার মার্কেটের পরিস্থিতি সঙ্গিন। কেশব মুখোপাধ্যায় নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘সেদিনের দুর্ঘটনার সাক্ষী আমি। এখনও ভাবলে গায়ে কাঁটা দেয়। বাজার সংস্কার হওয়ার খুব প্রয়োজন। না হলে যে কোনও দিন বড় বিপদ হবে।’
বাড়ির মালিক মিহির সরকার অবশ্য বিল্ডিং সংস্কার না করতে পারার জন্য দমকলকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, ‘বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট ও নির্মল চন্দ্র দে স্ট্রিট, এই দু’টি রাস্তা প্রায় ৬০ ফুট চওড়া। বিল্ডিং সংস্কারের জন্য নয়া প্ল্যান পুরসভা ও দমকলের কাছে জমা করেছিলাম। বড় দু’টি রাস্তা সংলগ্ন জমির অভ্যন্তরে ছ’মিটার জায়গায় নকশায় চার মিটার জায়গা ছেড়ে আবেদন করা হয়েছিল। বাস্তব পরিস্থিতি বুঝে পুরসভা তা অনুমোদন করে। তবে দমকল নাছোড়বান্দা। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে দমকলের গাড়ি ঢোকার জন্য তো বিল্ডিংয়ের দু’দিকেই বড় রাস্তা রয়েছে! তাও দমকল আইনে ছাড় মিলছে না। ফলে কাজ করতে পারছি না।’ কাউন্সিলার বিশ্বরূপ দে বলেন, ‘সরকারের দুই দপ্তরের মধ্যে কোনও সমন্বয় নেই। তাই মানুষের জীবন-জীবিকার স্বার্থে মেয়র যেন হস্তক্ষেপ করেন, সেই অনুরোধই জানিয়েছি।’ -নিজস্ব চিত্র