• পাখিদের জন্য খড়, নারকেল ছোবড়া দিয়ে কৃত্রিম বাসা, উদ্যোগ প্রশাসনের
    বর্তমান | ২৯ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সুন্দরবনে পাখিদের আনাগোনা বৃদ্ধি করতে এবার কৃত্রিম বাসা তৈরি করবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ। সজনেখালি লাগোয়া যেসব গ্রাম রয়েছে, সেখানকার কিছু উপাদান দিয়েই এই বাসা বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও ঝড়ে অনেক পাখির বাসা ভেঙে গিয়েছে। 


    বিশেষজ্ঞদের থেকে পরিষদ জেনেছে যে, একটা সময় কাঁকড়া, বাইন ইত্যাদি গাছে বাসা বাঁধতে দেখা যেত বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের। তাদের অনেকেই এখন আর সেভাবে আসে না। জেলা পরিষদ চাইছে, সারা বছর বিভিন্ন পাখি সুন্দরবনে বাসা বেঁধে থাকুক। তাই পাখিদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে নানা আকারে তৈরি করা হবে বিভিন্ন বাসা। জেলা পরিষদের উপাধ্যক্ষ অনিমেষ মণ্ডল বলেন, অনেক বছর আগে সুন্দরবনে নানা ধরনের পাখি দেখা যেত। ইদানীংকালে সেই পাখিদের অনেকগুলিরই আনাগোনা কমে গিয়েছে। তাদের এখানে ফিরিয়ে আনতেই এই বিশেষ পদক্ষেপ করা হয়েছে। এগুলি তৈরি করতে নারকেলের ছোবড়া, খড়, ধুন্দুলের খোসা ইত্যাদি ব্যবহার করা হবে। আপাতত পরীক্ষামূলকভাবে বসত এলাকা লাগোয়া গাছপালাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। বাসা তৈরি করার পর বেশ কিছুদিন পর্যবেক্ষণ করা হবে। অর্থাৎ, কী ধরনের পাখি সেখানে আসছে বা আদৌ তারা আসছে কি না, সবটাই নজর রাখা হবে। এজন্য ওই এলাকায় সিসিক্যামেরা বসানো হবে। যদি দেখা যায় এই উদ্যোগের ফলে বিভিন্ন পাখির আনাগোনা বেড়েছে, তখন আরও বেশি এলাকাজুড়ে এই বাসা তৈরি করা হবে। এই প্রকল্পের টেন্ডার ডাকার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। 


    বনকর্মীদের দাবি, বিভিন্ন ধরনের মাছরাঙা, শামুখখোল, গ্রিন বি ইটার প্রভৃতি পাখি দেখা যায় সুন্দরবনের এইসব গ্রামে। বাসা তৈরি করে দেওয়া মানে তারা সেখানে থেকে বংশবৃদ্ধি করতে পারবে। তাতে আগামী দিনে পাখির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। তবে এর আগে কখনও সুন্দরবনে পাখিদের জন্য কৃত্রিম বাসা তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এক্ষেত্রে অনেক পরিকল্পনা ও সবদিক বিচার করেই এই পদক্ষেপ করছে জেলা পরিষদ। কারণ জায়গাটি একেবারে সুন্দরবনের কোর এলাকা ঘেঁষা। জঙ্গলের ভিতরে হলে সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভের অনুমতি নিতে হতো। কিন্তু এক্ষেত্রে বসত এলাকায় এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বলে কোনও অনুমতি নিতে হয়নি।
  • Link to this news (বর্তমান)