ভাতের হাঁড়িতে ধুলো-বালি, ত্রিপল ঢেকে চলে অস্বাস্থ্যকর অঙ্গনওয়াড়ি
বর্তমান | ২৯ জুলাই ২০২৪
সংবাদদাতা, কাকদ্বীপ: উম-পুন ঝড়ে ঘর উড়ে যাওয়ার পর আর আস্তানা জেটেনি। ফলে একটি মন্দিরের দালানের বাইরে ত্রিপল টাঙিয়ে রান্নাবান্না হয়। এ খাবার বড়রা খেলে না হয় মেনে নেওয়া যেত। কিন্তু যেহেতু শিশুদের খেতে হয় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা এই খাবার, তাই বিষয়টি চিন্তার। উদ্বেগেরও। তবে প্রশাসনিক কর্তারা যেহেতু দেখেও দেখেন না, তাই এখানেই বাধ্য হয়ে চলছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। দরিদ্র পরিবারগুলি তাঁদের ছেলেমেয়েদের এখানে পড়তে পাঠান বটে তবে সর্বদা আতঙ্কেও থাকেন। দীর্ঘদিন এই দুরবস্থার মধ্যেই চলছে নামখানার ফ্রেজারগঞ্জ থানার পশ্চিম অমরাবতীর ১৩৬ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি।
ত্রিপল ঢাকা ঝুপড়ির ভেতরে রান্না হয়। পাশে এই কেন্দ্রের দিদিমণি শিশুদের পড়াশোনা করান। বাইরে থেকে দেখলে বোঝার উপায় নেই এটা কোনও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। ২০০৭ সাল থেকে কেন্দ্রটি চলছে। এখানকার এক বাসিন্দার বাড়িতে কেন্দ্র চলত। পরে একটি মন্দিরের বারান্দায় জায়গা দেওয়া হয়। তখন মন্দিরের বাইরে একটি স্থানে ত্রিপল টাঙিয়ে রান্না হতো। এরপর মন্দিরের পাশে গ্রামবাসীরা নিজেদের সন্তানদের স্বার্থে একটি অস্থায়ী ঘর করে দেন। সেটিই উম-পুন ঝড়ে যায় ভেঙে। তারপর বেশ কিছুদিন খোলা আকাশের নীচেই চলত অঙ্গনওয়াড়ি। মাস ছয়েক আগে এলাকার বাসিন্দারা ফের উদ্যোগ নিয়ে ত্রিপল টাঙিয়ে একটি ঘর বানিয়ে দিলেন। বর্তমানে সেই জোড়াতাপ্পি দেওয়া ঘরটিতেই কেন্দ্রটি চলছে। এলাকার মানুষের অভিযোগ, একটি স্থায়ী অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বানিয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু আজও পর্যন্ত কোনও সুরাহাই হল না।
বাসতি মণ্ডল নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘খুব কষ্ট করে দিদিমণি ওই ঘরে রান্না করেন, পড়ানও। বাচ্চাদের পড়ার ব্যাগটুকুও রাখার জায়গা হয় না। বৃষ্টির সময় হলে ভিজতে হয়। ভাবুন, প্রায় ৪০টি শিশু এখানে পড়াশোনা করে। তাদের কি দুরাবস্থা।’ বিষয়টি যে পঞ্চায়েত যে জানে না, এমন কিন্তু নয়।
ফ্রেজারগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কাশীনাথ জানা বলেন, ‘অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের দিদিমণি বিষয়টি জানিয়েছিলেন। পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে যথাসম্ভব সাহায্য করা হয়েছে। মূলত নিজস্ব কোনও জায়গা না থাকার কারণেই সমস্যা তৈরি হয়েছে। জমি পাওয়া গেলে সরকারিভাবে ঘর বানিয়ে দেওয়া হবে।’