তথাগত চক্রবর্তী: কুলতলিতে ফের নকল সোনার কারবার। ঘটনায় গ্রেফতার এক বিজেপি কর্মী। ধৃতের নাম কার্তিক দাস। অভিযুক্তকে আজ বারুইপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হবে। ঘটনার তদন্ত করছে কুলতলি থানার পুলিস। এবার কুলতলিতে নকল সোনা বন্ধক রেখে প্রতারণার অভিযোগ উঠল সরকারি দফতরের এক কর্মীর বিরুদ্ধে। কুলতলির কাঁটামারি বাজার এলাকার ঘটনা। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতের নাম কার্তিক দাস। তাঁর বাড়ি কুলতলিরই সানকিজাহান কলোনি এলাকায়। তিনি সেচ দফতরে কর্মরত। পাশাপাশি এলাকায় বিজেপি কর্মী হিসেবেও পরিচিত। বেশ কিছুদিন ধরে একাধিক বার তিনি কাঁটামারি বাজারের একটি দোকানে নকল সোনার গয়না বন্ধক রেখে টাকা নেন বলে অভিযোগ। আরও দুই মহিলাকে দিয়েও গয়না বন্ধক রাখান বলে অভিযোগ।
কাঁটামারি বাজারের স্বর্ণব্যবসায়ী নিতাই মণ্ডল জানান, গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকবার বিভিন্ন গয়না বন্ধক রেখে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা নিয়েছেন কার্তিক। ওই ব্যবসায়ী কার্তিককে চিনতেন। সেই সূত্রেই গয়না বন্ধক রেখে টাকা দিয়ে দেন তিনি। তাছাড়া দু’বার ২ মহিলাকে সঙ্গে নিয়ে এসেও গয়না বন্ধক রাখেন কার্তিক। মহিলারা সাংসারিক সমস্যার কথা বলে গয়না বন্ধক দিতে চাওয়ায় প্রাথমিকভাবে সন্দেহ হয়নি। কিন্তু বারবার গয়না বন্ধক রাখার ঘটনায় তাঁর সন্দেহ হয়। ওই গয়না পরীক্ষা করে তিনি দেখেন, দেখতে অবিকল সোনার গয়নার মত হলেও, সেগুলি আসলে সোনা নয়। এরপরই রবিবার সকালে কার্তিককে ডেকে পাঠান তিনি। জিজ্ঞাসাবাদে কার্তিক জানান, মৈপিঠের বাসিন্দা এক ব্যক্তি তাঁকে ওই গয়না বন্ধক রাখতে বলেছিল। নকল সোনার ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না বলেও দাবি করেন কার্তিক।
এরপরই পুলিসকে বিষয়টি জানান ওই ব্যবসায়ী। পুলিস এসে কার্তিককে আটক করে নিয়ে যায়। পরে তাকে গ্রেফতার করে। প্রসঙ্গত দিনকয়েক আগেই গ্রেফতার করা হয় কুলতলির পয়তারহাটের বাসিন্দা সাদ্দাম সর্দারকে। নকল সোনার মূর্তি দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার প্রতরাণা করত সে। এলাকায় রীতিমতো বড় চক্রও গড়ে তুলেছিল। কিছুদিনের মধ্যে আবারও নকল সোনার গয়না দিয়ে প্রতারণার অভিযোগ সামনে আসায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। পুলিস জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ২ মহিলা সহ মৈপিঠের ওই ব্যক্তিরও খোঁজ করছে পুলিস। এর সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদ সদস্য শ্যামপদ নস্কর বলেন, “কার্তিক বিজেপি নেতা। বিজেপির এরকম অনেক নেতা-ই অনৈতিক কাজে যুক্ত। পুলিস তদন্ত করে চক্রের মাথাদের খুঁজে বের করুক।” এর পালটা বিজেপির জয়নগর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি উৎপল নস্কর বলেন, “এলাকায় পানীয় জল সহ নানা অভাব-অভিযোগ নিয়ে সাধারণ মানুষের হয়ে ওই ব্যক্তি সরব হয়েছিলেন। তার ফলেই পরিকল্পনা করে ওকে ফাঁসানো হয়েছে। পুলিস সঠিক তদন্ত করলে আসল সত্যি সামনে আসবে।"