নীতি আয়োগের বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাইক বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে সোমবার রাজ্য বিধানসভায় নিন্দা প্রস্তাব আনে তৃণমূল। পাল্টা প্রতিবাদ জানিয়ে ওয়াক আউট করেন বিজেপি বিধায়করা। এ দিন নিন্দা প্রস্তাব আনেন তৃণমূল বিধায়ক মানস ভুঁইয়া। কিন্তু, এরপরেই পাল্টা সরব হন বিজেপি বিধায়করা।নোটিসে মানস ভুঁইয়া বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নীতি আয়োগের বৈঠকে বলতে না দিয়ে অপমান করা হয়েছে। বাংলার বঞ্চনা নিয়ে কথা বলছিলেন তিনি। কিন্তু, তাঁকে বাধা দেওয়া হয়। নীতি আয়োগের বৈঠকে মাইক বন্ধ করে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠ রোধের চেষ্টা হয়েছে।' মানস ভুঁইয়ার এই মন্তব্যের পালটা সরব হন বিজেপি বিধায়করা।
তপ্ত হয়ে ওঠে অধিবেশন কক্ষ। তৃণমূল বিধায়ক লাভলি মৈত্র বলেন, 'যা হয়েছে তা সকলেই দেখেছেন। বাংলার বঞ্চনা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অপমানিত হতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে। বিরোধীরা গঠনমূলক আলোচনা করতে চান না। বিজেপি বাংলা বিরোধী।'
পাল্টা বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, 'মানসবাবুর যে প্রস্তাব এনেছেন তার বিরোধিতা করছি। মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের সামনে যে বক্তব্য রেখেছেন, তার উপর ভিত্তি করে প্রসঙ্গ তোলা হয়েছে। এই নিয়ে আলোচনা সম্ভব নয়। নির্মলা সীতারামণ জানিয়েছেন ভেতরে কী হয়েছিল। আমরা এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করছি। নীতি আয়োগ যে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছিল, তা নিয়ে আলোচনা করা উচিত ছিল। আমরা ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু, আমাদের বলতে দেওয়া হয়নি। তাহলে কেন আজ ওদের বলতে দেওয়া হবে?'
রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, 'বৈঠকে যা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাই বলেছেন। তিনি যদি নীতি আয়োগের বৈঠকে বলতে না পারেন, সেক্ষেত্রে কোথায় বলবেন! তাঁর মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়।' তৃণমূল এবং বিজেপি দুই তরফের বিধায়কদের বাদানুবাদে তপ্ত হয়ে ওঠে অধিবেশন কক্ষ। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া অবস্থান নেন। তিনি বলেন, ' বিরোধীরা ভুলে যাচ্ছেন লিডার অফ দ্য হাউস মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।' আলোচনা শোনার কথা বলেন তিনি। এরপরে বিধানসভার বাইরে গিয়ে শঙ্কর ঘোষের নেতৃত্বে স্লোগান দিতে থাকেন বিজেপির বিধায়করা।
উল্লেখ্য, গত শনিবার নীতি আয়োগের বৈঠকে বিরোধী রাজ্যগুলির একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগদান করেছিলেন। কিন্তু, পাঁচ মিনিটের বেশি তাঁকে বক্তব্য রাখার জন্য সময় দেওয়া হয়নি এবং মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। এরপরেই তিনি বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে আসেন।