চোখের সামনে নদী ভাঙনে তলিয়ে যাচ্ছে একের পর এক বাড়ি, ভয়াবহ পরিস্থিতির বিবরণ শুনলে চমকে উঠবেন...
আজকাল | ২৯ জুলাই ২০২৪
আজকাল ওয়েবডেস্ক: সোমবার সকাল থেকে ভয়াবহ নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে মুর্শিদাবাদ জেলার সামশেরগঞ্জ ব্লকের শিবপুর গ্রাম। সকাল থেকে শুরু হওয়া গঙ্গা নদীর ভাঙনে প্রায় একশ ফুট এলাকা নদী গর্ভে তলিয়ে গেছে। তার সঙ্গে কমপক্ষে ১০টি বাড়িও নদী গর্ভে তলিয়ে গেছে। ভাঙন বাড়তে পারে এই আশঙ্কায় শিবপুর গ্রামের নদী তীরবর্তী এলাকার প্রচুর বাসিন্দা নিজেদের বাড়িঘর ভেঙে অন্যত্র চলে যেতে শুরু করেছে। জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে ইতিমধ্যে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য খাওয়ার এবং অন্যত্র থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরেই গঙ্গা নদীর ভাঙন মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ এবং ফারাক্কা ব্লকে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। শামসেরগঞ্জ ব্লকের শিবপুর , চাচন্ড , প্রতাপগঞ্জ, ধানঘড়া সহ একাধিক এলাকা গত কয়েক বছরে গঙ্গা নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গৃহহীন হয়ে পড়েছে কমপক্ষে এক হাজার পরিবার। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধের জন্য কেন্দ্রের কাছে আর্থিক সাহায্যের দাবি জানানো হলেও এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রের তরফ থেকে মুর্শিদাবাদের ভাঙন প্রতিরোধের জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির উদ্যোগে রাজ্য সরকার ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সামশেরগঞ্জে ভাঙন প্রতিরোধের কাজ শুরু করেছে। তবে শিবপুর এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধের কাজ শুরু হওয়ার আগেই ফের একবার সেখানে নতুন করে গঙ্গা নদীর ভাঙন শুরু হল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরেই গঙ্গা নদীতে জল স্তর বৃদ্ধির পাচ্ছিল। সোমবার হঠাৎই স্থানীয় বাসিন্দারা দেখেন গঙ্গা নদীর তীরবর্তী এলাকায় ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা যে দ্রুততার সঙ্গে গঙ্গা নদী লোকালয়ের দিকে এগিয়ে আসছে তাতে আজ সন্ধ্যের মধ্যে ৫০-৬০টি বাড়ি নদী গর্ভে তলিয়ে যেতে পারে। ভাঙনের ভয়াবহ রূপ দেখে গঙ্গার তীরবর্তী এলাকাতে বসবাসকারী একাধিক পরিবার ইতিমধ্যে তাদের বাড়িঘর ভেঙে প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে অন্যত্র সরে যেতে শুরু করেছেন।
স্থানীয় চাচন্ড গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ফেরদৌসী খাতুন বলেন, 'সোমবার সকল থেকে কমপক্ষে ১০ টি বাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কমপক্ষে ২০ টি পরিবার। তবে নদীর ভাঙন এখনও চলছে। ক্ষতির পরিমান আরও বাড়তে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি। ' সামশেরগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলাম বলেন, 'ধুলিয়ান পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ভাঙন প্রতিরোধের কাজ শুরু হয়েছে। শিবপুরের ভাঙন প্রতিরোধের কাজের টেন্ডার হয়ে গেলেও লোকসভা নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যাওয়াতে তা খোলা যায়নি।' নদীর জলস্তর একটু কমলেই ওই এলাকাতে ভাঙন প্রতিরোধের কাজ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। সামশেরগঞ্জের বিডিও সুজিত চন্দ্র লোধ বলেন, 'নদীর ধারে যাদের বাড়ি রয়েছে এবং যাদের বাড়ি তলিয়ে যাওয়ার মত অবস্থায় রয়েছে প্রশাসনের তরফ থেকে তাদের অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য খাবার এবং জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।'