সুতপা সেন ও শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায়: নীতি আয়োগের বৈঠকে মাইক-বিতর্কের আঁচ এবার বিধানসভায়! মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'নীতি আয়োগের বৈঠকে আমাকে পাঁচ মিনিটের বেশি বলতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু তার মধ্যেও আমি সমস্ত রাজ্যের কথা, এমনকী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কথাও বলে এসেছি। বলেছি, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে দিতে এই সরকার একের পর এক উদ্যোগ নিচ্ছে'।
ঘটনাটি ঠিক কী? শনিবার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বৈঠক হয়েছে দিল্লিতে। বিরোধী জোটের মুখ্যমন্ত্রীদের প্রায় সকলেই যখন সেই বৈঠক বয়কট করলেন, তখন একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বৈঠকের মাঝ-পথে ওয়াক-আউট করেন তিনি। অভিযোগ, 'আমাকে বলতে দেওয়া হয়নি। আমার বলার সময় থামিয়ে দেওয়া হয়। আমি বলতে শুরু করার ৫ মিনিটের মধ্যে আমার মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়। এটা অপমানজনক'।
সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে এবার বিধানসভায় নিন্দা প্রস্তাব আনল তৃণমূল। কবে? আজ, সোমবার। অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'ভারত ভুটান যৌথ নদী কমিশন অবিলম্বে গঠন করতে হবে। নীতি আয়োগের বৈঠকে এই নিয়ে আমি বলেছি। এখান থেকে একটি সংসদীয় টিম কেন্দ্রীয় সেচ মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে প্রস্তাব দিন। দিল্লিতে আমাদের দলের সাংসদরাও এই নিয়ে দাবি জানাবে'।
মুখ্যমন্ত্রীর আরও বক্তব্য, 'কোনওভাবেই তিস্তার জল ছাড়া যাবে না। এর আগেরবার চুক্তির সময় জ্যোতি বসুকে ডাকা হয়েছিল, কিন্তু আমাকে ডাকা হয়নি। আমি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি, কোনওভাবে তিস্তার জল আমরা ছাড়তে পারবো না'। তাঁর কথায়, 'উত্তরবঙ্গের মানুষ জল না খেয়ে মরবে। রাজ্যের স্বার্থ বিসর্জন দিতে আমি পারব না। বাংলাদেশকে আমি ভালোবাসি। কিন্তু রাজ্যের মানুষের স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে আমি কোন চুক্তি করতে পারব না'।
এর আগে, এদিন যখন অধিবেশনের শুরুতেই তৃণমূলের তরফে এই নিন্দা প্রস্তাব করেন মানস ভুঁইয়া, তখন তুমুল হই হট্টগোল শুরু হয় বিধানসভায়। প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন বিজেপি বিধায়করা। শেষপর্যন্ত স্লোগান দিতে দিতে অধিবেশন থেকে ওয়াক আউট করেন তাঁরা।
বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ বলেন, 'সরকার পক্ষ দ্বারা আহুত যে প্রস্তাব, সেই প্রস্তাবে সম্পূর্ণ বিরোধিতা করছে ভারতীয় জনতা পার্টির পরিষদীয় দল। নীতি আয়োগে যাওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বারবার মত পরিবর্তন করেন, এবং পরবর্তীকালে তিনি বৈঠকে গিয়ে যে আচরণ করেন, তা সংসদীয় গণতন্ত্রের পক্ষে বেমানান। রাজ্যের মুখ্য়মন্ত্রী, তিনি বাইরে এসে সাংবাদিকদের সামনে যে বক্তব্য় বলেন, সেই বক্তব্য নীতি আয়োগের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ রূপে খণ্ডন করা হয়'।