লগ্নি টানতে বিশেষ উদ্যোগ, আগামী মাসেই শহরে ‘ফুড অ্যান্ড ফ্রুট ফেস্টিভ্যাল’
প্রতিদিন | ২৯ জুলাই ২০২৪
গৌতম ব্রহ্ম: পুজোর আগেই শহরে বসছে শপিং ফেস্টিভ্যাল। তার আগেই বিনিয়োগের বীজতলা তৈরি করতে কলকাতায় বাংলার খাবার, ফল-ফুল, সবজি নিয়ে মেগা উৎসব। ‘বেঙ্গল ফুড অ্যান্ড ফ্রুট ফেস্টিভ্যাল’। বাংলাজুড়ে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কারখানা তৈরি করে কর্মসংস্থানের দরজা আরও উন্মুক্ত করতেই এই অভিনব উৎসব। নবান্নের আশা, এই উৎসব ঘিরে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালনে প্রচুর ‘স্টার্ট আপ’ পাবে বাংলা। আসবে মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ।
মুখ্যমন্ত্রী বরাবরই শ্রম নিবিড় বিনিয়োগ প্রকল্পের হয়ে সওয়াল করেন। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ বা উদ্যানপালন সেই গোত্রেরই। মুখ্যমন্ত্রী কৃষিনির্ভর শিল্পে বিপুল সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ করেছেন বহুবার। সম্প্রতি দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সরকারি উদ্যোগে দু’টি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট স্থাপনের কথাও ঘোষণা করেছেন। মাল্টিপারপাস হিমঘর তৈরিরও নির্দেশ দিয়েছেন উদ্যানপালন দপ্তরকে। এবার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আস্ত একটা উৎসব। ৯ আগস্ট থেকে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে শুরু হবে এই ‘ফুড অ্যান্ড ফ্রুট ফেস্টিভ্যাল’। চলবে ১১ আগস্ট পর্যন্ত। প্রধান আয়োজক পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন বিভাগ। দপ্তরের এক আধিকারিক জানালেন, বাংলার ফল, ফুল, সবজি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে যে বিপুল সম্ভাবনা নিহিত তা তুলে ধরতেই এই উৎসব। মূল উদ্দেশ্য কর্মসংস্থান। বাংলার উদ্যোগপতিদের ফুড প্রসেসিং ইউনিট তৈরির ব্যাপারে আরও উৎসাহিত করা।
জানা গিয়েছে, এই ধরনের কারখানা তৈরির পথে যেখানে যেখানে বিনিয়োগকারীরা হোঁচট খান, সেই জায়গাগুলি নিয়ে সরাসরি আলোচনার জন্য তিনদিনের উৎসবে দু’দিনের সম্মেলন রাখা হচ্ছে। থাকছে তিন দিনের প্রদর্শনী। যেখানে ফল-ফুল, সবজি, ভেষজ দ্রব্য তো থাকবেই, এই সব জিনিস সংরক্ষণের উপায়, রপ্তানির উপযোগী প্যাকেজিং নিয়েও হাজির থাকবেন ‘কি প্লেয়ার’-রা। থাকবে কৃষি দপ্তর, কৃষি বিপনন দপ্তর, সুফল বাংলা-সহ একাধিক দপ্তরের স্টল। বর্ধমানের সীতাভোগ, মিহিদানা আগেই পেয়েছে। সম্প্রতি দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের মোয়া, উত্তরবঙ্গের কালো নুনিয়া চালও জিআই পেয়েছে। ওড়িশাকে টপকে জিআই আদায় করে নিয়েছে বাংলার রসগোল্লা। এবার বারুইপুরের পেয়ারার পালা। সম্প্রতি যাদবপুরে ভোটপ্রচারে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এই খবর দিয়েছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “জয়নগরের মোয়া জিআই পেয়েছে। সীতাভোগ-মিহিদানা পেয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি, বারুইপুরের পেয়ারাও যাতে জিআই পায়। জিআই পাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।” পাশাপাশি, বারুইপুরের বিভিন্ন ফল রপ্তানির লক্ষ্যে এখানে ফল প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র তৈরির আশ্বাস দেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “এখানকার পেয়ারা খুবই সুস্বাদু। আরও অনেক ফল হয়। আমরা এখানে একটা ফল প্রক্রিয়াকরণ শিল্প কেন্দ্র তৈরি করব। জেলায় দুটো ফল প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র হবে। সাগর-নামখানা নিয়ে ওদিকে একটা হবে। আর বারুইপুর-ক্যানিং নিয়ে এখানে একটা হবে। এর ফলে ফল রপ্তানি বাড়বে। কর্মসংস্থান বাড়বে।” আসলে বারুইপুরে পেয়ারার পাশাপাশি জামরুল, লিচু-সহ প্রচুর ফলের চাষ হয়। মালদহ, মুর্শিদাবাদ আমের জন্য বিখ্যাত। যা দিয়ে খুব ভাল আমসত্ত্ব তৈরি হয়। পাশকুড়া, বাগনানের ফুলচাষের খ্যাতি জগৎজোড়া। দেশ-বিদেশে রপ্তানি হয়। এবার ফল, ফুল, সবজি, মধু, সব নিয়েই লগ্নির আহ্বান।