• লাউদোহার পরিত্যক্ত বর্জ্য নিষ্কাষণ কেন্দ্রে প্রচুর ভুয়ো ভোটার কার্ড উদ্ধার, চাঞ্চল্য
    বর্তমান | ৩০ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, দুর্গাপুর: ফরিদপুর থানার লাউদোহার পরিত্যক্ত কঠিন-তরল বর্জ্য নিষ্কাশন কেন্দ্রে সোমবার শতাধিক ভোটার কার্ড ও নির্বাচনীয় নথিপত্র সহ সরকারি সিলমোহর পড়ে থাকতে দেখে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। ওই সমস্ত ভোটার কার্ড ও নথি ছাড়াও সেখানে মজুত প্রতিটি রাজনৈতিক দলের দলীয় পতাকা আগুনে পোড়ানোর প্রচেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। কে বা কারা সেখানে ওগুলি ফেলেছে এবং কী উদ্দেশ্যে ফেলে গেছে, সেই বিষয়ে ধন্দে পড়ে এলাকাবাসী। কৌতূহলী বাসিন্দারা পুলিস-প্রশাসনকে খবর দেয়। ঘটনাস্থলে পুলিস এসে ভোটার কার্ড ও নথিপত্র নিয়ে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতোর। 


    বিজেপির অভিযোগ, লোকসভা নির্বাচনে ওই ভুয়ো ভোটার কার্ড ব্যবহার করে ভোট দিয়েছেন শাসকদলের নেতাকর্মীরা। কাজ মিটতেই সেগুলি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি তৃণমূল কংগ্রেসের। তাদের দাবি, বিজেপি গুজব ছড়াচ্ছে। পুলিস সঠিক তদন্ত করুক। 


    বিডিও জানান, ওই ভোটার কার্ড ও নথি অপ্রয়োজনীয় হওয়ায় নিষ্কাশনের জন্য রাখা হয়েছিল বর্জ্য নিষ্কাশন কেন্দ্রে।


    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লাউদোহা গ্রাম পঞ্চায়েতের ভদ্রপুর এলাকায় ২০১৭ সালে কঠিন-তরল বর্জ্য নিষ্কাশন কেন্দ্র তৈরি হয়। এর পর থেকে ওই কেন্দ্রে কোনও বর্জ্য নিষ্কাশন প্রক্রিয়াকরণ না হওয়ায় পরিত্যক্ত হয়ে যায় কেন্দ্রটি। কেন্দ্রের দরজা-জানালা চুরি হয়ে যায়। সমাজবিরোধীদের আখড়ায় পরিণত হয়। ঝোপ জঙ্গলে ভরে যায়। এদিন সকালে ওই কেন্দ্রের ভেতর স্থানীয় বাসিন্দাদের হঠাৎই নজরে পড়ে শতাধিক ভোটার কার্ড, নির্বাচনী নথিপত্র ও একাধিক সরকারি সিলমোহর। এলাকাবাসী সুনীল বেসরা বলেন, ভোটার কার্ড এভাবে পড়ে রয়েছে দেখে আবাক হলাম। সেগুলো পুড়িয়ে দেওয়ারও প্রচেষ্টা  হয়েছে। সেখানে আমাদের এলাকার দু’জনের ভোটার কার্ড পড়েছিল। আমি তাঁদের জানিয়ে ছবি দেখিয়েছি। তাঁদের দাবি, কয়েক বছর আগে ওই দু’জনের ভোটার কার্ড হারিয়ে গিয়েছিল। পুলিস-প্রশাসন এসেছিল বিষয়টি দেখুক। পশ্চিম বর্ধমান জেলার বিজেপির সহ সম্পাদক অভিজিৎ দত্ত বলেন, আমরা বিগত লোকসভা নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনারের কাছে অভিযোগ করেছিলাম প্রতিটি বিধানসভায় ৮০ হাজার ভুয়ো ভোটার আছে। এই ভোটার কার্ডগুলিও ভুয়ো ভোটারদের। আমরা ঘটনার তদন্তের জন্য প্রশাসনের দ্বারস্থ হব।


    তৃণমূল কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমান জেলার সম্পাদক সুজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, মানুষের রায়ে তৃণমূল জয়লাভ করেছে। তৃণমূলের বদনাম করে এভাবে বাজার গরম করা যায় না। পুলিস তদন্ত করে যেটা সঠিক, সেটা করুক। বিজেপি গুজব ছড়াচ্ছে। দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের বিডিও অর্ঘ্য মুখোপাধ্যায় বলেন, ওই ভোটার কার্ড ও নথিপত্রগুলি ১৯৯৯-২০০১ সালের। অপ্রয়োজনীয় হওয়ায় আমরা বর্জ্য নিষ্কাশন কেন্দ্রে নিষ্কাশনের জন্য পাঠিয়েছিলাম। সেগুলি নিষ্কাশনের দায়িত্বে যিনি ছিলেন তাঁর গাফিলতির জন্য ওখানে পড়েছিল। এদিন সেগুলি নিষ্কাশন করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজনৈতিক কোনও ঘটনা নেই।


    দুর্গাপুর মহকুমা শাসক সৌরভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, বিষয়টি দেখা হচ্ছে।- নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)