চিকিৎসক-নার্সরা নিয়মিত আসেন না ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিক্ষোভ তৃণমূলের
বর্তমান | ৩০ জুলাই ২০২৪
সংবাদদাতা, দিনহাটা: নিয়মিত হাসপাতালে আসেন না ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক। চিকিৎসক নার্সদের খামখেয়ালিপনায় ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য পরিষেবা। কখনও ভুল চিকিৎসা বা রেফারের কারণে মৃত্যু হচ্ছে রোগীদের। গোঁসানিমারি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এই বেহালদশা নিয়ে আন্দোলনে নামল তৃণমূল কংগ্রেস। সোমবার বিপিএইচসি’র সামনে শামিয়ানা খাটিয়ে দিনভর চলল বিক্ষোভ কর্মসূচি। অবশেষে কোচবিহার জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে আশ্বাস পেয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি তুলে নেয় তৃণমূল নেতৃত্ব। এদিনের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের কোচবিহার জেলা পরিষদের সদস্য শ্রাবণী ঝা, দিনহাটা-১ এ ব্লক তৃণমূলের সহ সভাপতি মিঠুন চক্রবর্তী, গোঁসানিমারি-১ তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি রাখাল রায় সহ একাধিক তৃণমূল নেতা ও জনপ্রতিনিধি। যদিও পরিষেবা বেহালের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। অভিযুক্ত বিএমওএইচের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যভবনে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
জেলা পরিষদ সদস্য শ্রাবণী ঝা বলেন, মাসে একদিন অফিসে এসে সই করেন বিএমওএইচ। ব্লকের স্বাস্থ্য প্রধানের অনুপস্থিতির কারণে প্রশাসনিক কাজকর্ম শিকেয় উঠেছে। রাত ১১টা বাজলেই হাসপাতালের দরজায় তালা মারা হয়। চিকিৎসক নার্সদের খামখেয়ালিপনায় পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। এক সপ্তাহে তিন জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। বাধ্য হয়ে এদিন আমরা বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছি।
গোঁসানিমারি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রামেশ্বর ঘোষকে এ বিষয়ে একাধিকবার ফোন ও মেসেজ করা হলেও তাঁর কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। কোচবিহারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকান্ত বিশ্বাস বলেন, স্বাস্থ্য পরিষেবায় কোনও সমস্যা হচ্ছে না। তবে বিএমওএইচের অনুপস্থিতি নিয়ে অভিযোগ পেয়েছি। সেই বিষয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তাঁরা জেলাকে রিপোর্ট দিয়েছেন। সেই রিপোর্ট স্বাস্থ্যদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্যদপ্তরের নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
দিনহাটা-১ ব্লকের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র গোঁসানিমারিতে অবস্থিত। দীর্ঘদিন ধরেই বিএমএইচের অনুপস্থিতি নিয়ে অভিযোগ ছিল। প্রশাসনিক প্রধানের অনুপস্থিতির কারণে একাধিক সমস্যা দেখা দিয়েছে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। নিয়মিত চিকিৎসক ও নার্সরা আসছেন না বলে অভিযোগ উঠছে। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা ঠিকমতো হচ্ছে না। রাত ১১টার পরে হাসপাতালের ভিতরের গেটে তালা মেরে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। হাসপাতালের ল্যাব থাকা সত্ত্বেও বাইরে থেকে রক্ত পরীক্ষা করানো হয়। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা ঠিকমতো হয় না। হাসপাতালের প্রধান কর্তার অনুপস্থিতির কারণেই এই সমস্যাগুলি আরও বেড়েছে। একাধিক রোগী মৃত্যুর ঘটনায় এই হাসপাতাল নিয়ে মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সেগুলির বিভাগীয় তদন্ত দাবি তুলেছেন আন্দোলনকারীরা। নিজস্ব চিত্র।