• অনিয়মের প্রতিবাদ, ফিনান্স কর্তাকে শাসানি
    বর্তমান | ৩০ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: বালি পুরসভার শীর্ষ পদাধিকারী ও ফিনান্স বিভাগের এক শীর্ষকর্তার কথোপকথনের একটি পুরনো ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় শোরগোল পড়েছে। মহকুমা স্তরের ওই শীর্ষ পদাধিকারীর বিরুদ্ধে মাসখানেক আগেই সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ, বালি পুরসভার ওই শীর্ষ পদাধিকারী সঠিক কাগজপত্র ছাড়াই কোটি কোটি টাকার বিলে সই করার জন্য চাপ দিয়েছেন পুরসভার ফিনান্স বিভাগের ওই কর্তাকে। বিলের অঙ্ক ও কাজের মধ্যে বিস্তর গরমিল থাকায় ওই কর্তা কোনও কাগজে সই করতে চাননি। এ নিয়ে তাঁকে শাসানির মুখে পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ। এ নিয়ে জলঘোলা হয়েছে। সবটাই প্রকাশ্যে এসেছে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওর মাধ্যমে। ‘বর্তমান’ অবশ্য সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি। 


    বিনা টেন্ডারে, উপযুক্ত কাগজপত্র ছাড়াই বারে বারে বিভিন্ন ঠিকাদার সংস্থা কাজ পেয়েছে বালি পুরসভায়। এমন অসংখ্য গরমিলের সন্ধান মিলেছে। এই ধরনের কাজ করায় ঠিকাদারদের প্রাপ্য প্রায় সওয়া ২ কোটি টাকার বিলে সই করতে চাননি ওই পুরকর্তা। টাকার দাবিতে ওই কর্তাকে ঘেরাও করেছিল ঠিকাদারদের একটি অংশ। শেষমেশ চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে ওই কর্তা নোট শিটে একাধিক অনিয়ম ও গরমিলের কথা লিখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছিলেন। এরপরই আচমকা উত্তরবঙ্গে বদলি হয়ে যান বালি পুরসভার ফিনান্স বিভাগের ওই কর্তা। এ নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে। 


    সেই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, ফিনান্স বিভাগের ওই কর্তাকে রীতিমতো শাসাচ্ছেন মহকুমা স্তরের ওই শীর্ষ আধিকারিক। তিনি রীতিমতো হুঁশিয়ারির সুরে বলছেন, ‘ম্যাডাম ম্যাডাম করবেন না। আপনারা শুধু শুনবেন। বারবার চিত্রগুপ্তের খাতার মতো এফআর রুল লিখে পাঠাবেন না। দেয়ার ইজ অনলি ওয়ান রুল। কাজ হয়ে গিয়েছে মানে টাকা দিতে হবে। একমাত্র সততা কী আপনিই নিয়ে রেখেছেন, আর আমরা চুরি করছি? আমি তিনটি ব্লক খাটিয়ে এসেছি...।’ ভিডিওতে এও দেখা গিয়েছে, ফিনান্স বিভাগের ওই কর্তা বলছেন, ‘আমার কাজ ডিপার্টমেন্ট কী ভুল করল, তা নোট লেখা। কারও টাকা আটকানো আমার উদ্দেশ্য নয়। আমি শুধু কোথায় ভুল হয়েছে, তা তুলে ধরতে চেয়েছি।’ এরপরেই কার্যত শাসানির সুরে মহকুমা স্তরের ওই শীর্ষ আধিকারিক পুরসভায় তাঁর ডেপুটিকে নির্দেশ দেন, সব পাওনাদারদের ওনার (ফিনান্স বিভাগের কর্তা) ঘরে ঢোকান। আপনি যা করছেন, সেটা আমাদের সকলের জন্য খারাপ হচ্ছে। ভিডিওর এই জায়গায় দেখা যায়, ফিনান্স বিভাগের ওই কর্তা বলছেন, ‘আমি চাই, বালি পুরসভায় আইন মেনে কাজ হোক।’ এরপরেই ধমক দেন মহকুমা স্তরের ওই শীর্ষকর্তা, বলেন, ‘আপনার বলার সাহস হয় কী করে যে, আমি বেআইনি কাজ করছি? যদি আপনাকে ফাঁসাতে হয়, আমি আপনার নামে কমপ্লেন করব, আপনি চেয়ারে বসে বলেছেন, আমি সব বেআইনি কাজ করছি...। এখানে সবাই আমার কথা শুনবেন। আমি যা বলব, তাই করবেন।’ এই ভিডিও নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়েছে বালিতে। মহকুমা স্তরের ওই শীর্ষ আধিকারিকের বক্তব্য জানতে তাঁকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। মোবাইলে বার্তা পাঠানো হলেও তাঁর জবাব দেননি।
  • Link to this news (বর্তমান)