বাইকে এসে মেয়েদের গায়ে হাত-কটূক্তি, মধ্যমগ্রামে রোমিওদের উৎপাত
বর্তমান | ৩০ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: সন্ধ্যা হলেই শুরু হচ্ছে রোমিওদের দাপাদাপি। পথচলতি মহিলাদের কটূক্তি, অশ্লীল ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য তো আছেই। সেই সঙ্গে রোমিওরা বাইক নিয়ে যাওয়ার সময় মহিলাদের শরীর স্পর্শ করে গতি বাড়িয়ে চলে যাচ্ছে। কেউ কেউ আবার বাইক নিয়ে যেতে যেতে একা কোনও মহিলাকে দেখলে তাঁর কানের গোড়ায় ‘টুম্পাসোনা’ বলে চিৎকার করে চম্পট দিচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে, মধ্যমগ্রামের কিছু এলাকায় এই উৎপাত বাড়ছে। সম্প্রতি এক যুবতী মধ্যমগ্রাম থানায় এনিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও অভিযুক্তরা এখনও অধরা।
মধ্যমগ্রাম পুরসভার ১১ নং ওয়ার্ডের বসুনগর এলাকার অধিকাংশ মানুষ চাকরিজীবী বা সম্পন্ন ব্যবসায়ী। বসুনগরের একদিকে যশোর রোড, অন্যদিকে সোদপুর রোড। এই দুই বড় রাস্তা থেকে দু’দিকেই নানা অলিগলিতে ঢুকে পড়া যায়। এটাকেই সুযোগ হিসেবে নিচ্ছে রোমিওরা। সন্ধ্যার পরই বসুনগরে আনাগোনা বাড়ছে এই যুবকদের। চলন্ত বাইক থেকে কটুক্তি ছুড়ে দেওয়া হচ্ছে। কখনও আবার চলন্ত বাইক থেকে মহিলাদের প্রকাশ্যে শ্লীলতাহানি করা হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগে বসুনগরের শিপ্রা গার্ডেন আবাসনের বাসিন্দা এক তরুণী রাত ৮টা নাগাদ যখন বাড়ি ফিরছিলেন। তখন তিনি এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হন। অভিযোগ, পিছন থেকে একটি বাইকে করে এসে এক যুবক তাঁর পিঠে হাত দেয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাইকের গতি বাড়িয়ে পালায়। নেতাজি সঙ্ঘ, শাচি ভিলেজ সংলগ্ন এলাকাতেও রোমিওদের দাপাদাপিতে নাজেহাল মহিলারা। এক যুবতীর দাবি, দিন ১৫ আগে রাত ৯টা নাগাদ বাড়ি ফেরার সময় দুই যুবক বাইকে করে তাঁর কাছে আসে। তারপর কানের কাছে ‘টুম্পা সোনা’ বলে চেঁচিয়ে গাড়ির আওয়াজ তুলে উধাও হয়। এলাকার এক ব্যক্তি এসব ঘটনার প্রতিবাদ করায় তাঁকে বাইক থেকে ধাক্কা মারে ফেলে দেওয়ার অভিযোগও শোনা গেল এলাকায়। কয়েকদিন আগে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দোহারিয়া এলাকায় রোমিওদের হাতে শ্লীলতাহানির শিকার হন এক তরুণী। তদন্তে নেমে পুলিস সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করলেও অভিযুক্তদের নাগাল পায়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, বসুনগর ১ নম্বর গেট সংলগ্ন পুকুরের ধারে সন্ধ্যা হলেই জড়ো হয় বহিরাগতরা। নেশার আসর বসে। পুলিসের নজরদারির অভাবেই এসব উৎপাত বেড়ে চলেছে। এ বিষয়ে ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার অন্তরা মজুমদার বলেন, ‘কিছু অভিযোগ এসেছে আমার কাছে। পুলিসকে সবটা জানিয়েছি।’ বারাসত পুলিস জেলার সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খড়িয়া বলেন, ‘বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। আগামীতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে, তা পুলিস দেখবে।’