‘দুষ্প্রাপ্য’ বিষ বের করতে গিয়ে মৃত্যু কোটি টাকার সাপের, শোধ তুলতেই ব্যবসায়ীকে অপহরণ!
প্রতিদিন | ৩০ জুলাই ২০২৪
অর্ণব আইচ: দুষ্প্রাপ্য মূর্তি নয়। কোটি টাকার সাপের বিষ।
চিৎপুর থেকে অ্যান্টিক ব্যবসায়ীকে গয়ায় নিয়ে গিয়ে অপহরণ করার পিছনে এই দুষ্প্রাপ্য সাপ ও ততোধিক দুষ্প্রাপ্য কোটি টাকার সাপের বিষের ‘কাহিনী’ রয়েছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। পুলিশের কাছে খবর, ৬ ফুট ৯ ইঞ্চির ওই ‘দুষ্প্রাপ্য’ সাপের মুখ থেকে বিষ বের করতে গিয়ে তাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেন ওই অ্যান্টিক ব্যবসায়ী। সেই সাপের মৃত্যুর শোধ তুলতেই গয়ার একটি হোটেলের ব্যাঙ্কোয়েট হলে আটকে রেখে ৪০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চায় অপহরণকারীরা।
অপহরণের জন্য রীতিমতো ওই ব্যাঙ্কোয়েট হলটি বুক করে তিন অপহরণকারী। অজিত নামে এক অপহরণকারী গ্রেপ্তার হয়েছে। টিঙ্কু পাশোয়ান-সহ দুই অপহরণকারী পলাতক। কালো রঙের ওই সাপটির ভিডিও ফুটেজ পুলিশের হাতে এসেছে। সেটি কী প্রজাতির ও আদৌ বিষাক্ত কি না, তা নিয়ে রীতিমতো সন্দিহান লালবাজারের গোয়েন্দা আধিকারিকরাও। যেহেতু সাপটির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে খবর, তাই কলকাতা পুলিশের পক্ষে ওই ফুটেজটি বিহারের বন দপ্তরকে পাঠানো হতে পারে।
পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, অপহৃত ওই অ্যান্টিক ব্যবসায়ী শুধু যে অ্যান্টিক বস্তুর দাম নির্ধারণ করে শংসাপত্র দিতেন, তা নয়। তিনি রীতিমতো সাপের বিষদাঁত বা বিষ থলে থেকে বিষ বের করতে পারেন। সেই বিরল বিষ কাচের কৌটোয় ভরে অ্যান্টিক পাচারকারীরাই তা পাচার করত বিদেশে। সম্প্রতি উত্তর কলকাতার ওই অ্যান্টিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে পাচারকারী টিঙ্কু পাশোয়ানরা। তারা জানায়, গয়া সংলগ্ন এলাকার জঙ্গল থেকে অতি বিরল একটি বড় সাপ ধরা পড়েছে। তার বিষ অত্যন্ত দুষ্প্রাপ্য ও দাম অন্তত কোটি টাকা। ওই বিষ সাপের বিষের থলি থেকে ব্যবসায়ীকে বের করার জন্য অনুরোধ জানায় তারা। ব্যবসায়ী রাজি হয়ে যান। তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টিঙ্কু, অজিতরা অনলাইনে ৭০ হাজার টাকা আগাম পাঠায়। গত সপ্তাহে ব্যবসায়ী গয়ায় পৌঁছলে একটি ডেরায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। ঝুড়ি থেকে সাপটি বের করে সেটির বিষ বের করার চেষ্টা করেন ব্যবসায়ী। কিন্তু বড় চেহারার শক্তিধর সাপটি বাধা দেয়। তার মুখের ভিতর জোর করে যন্ত্র প্রবেশ করানো হয়। তাতেই মৃত্যু হয় সাপটির।
‘কোটি টাকার সাপের’ মৃত্যু হওয়ার ফলে বিষ পাচার চক্রের যাবতীয় রাগ এসে পড়ে ব্যবসায়ীর উপর। অপহরণ করে হোটেলের রাখার পর তারা চিৎপুরে তাঁর পরিবারের লোকেদের কাছে ৪০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চাইলেও ৩৫ লক্ষ টাকায় চূড়ান্ত হয়। গয়ার রেললাইনের কাছে মুক্তিপণের টাকা নিতে এসে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় অজিত। পলাতকদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।