দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে হাওড়া-মুম্বই মেল। আর সেই দুর্ঘটনায় অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন হুগলির এক দম্পতি। ওই ট্রেনে ছিলেন হুগলির খামারগাছির দম্পতি শ্যামাপ্রসাদ হালদার ও অঞ্জনা হালদার। অঞ্জনা হালদার চন্দননগর কমিশনারেটে কর্মরত। মূলত তাঁরই চিকিৎসার জন্য যাওয়া হচ্ছিল মুম্বই। কিন্তু তার মাঝেই ঘটে গেল বিপত্তি। শ্যামাপ্রসাদের দাদা রামপ্রসাদ হালদার জানান, দুর্ঘটনা পর তাঁকে ফোন করে খবর দেন ভাই। আতঙ্কে কান্নাকাটি করছিলেন অঞ্জনা।দুর্ঘটনার সময় ঠিক কী ঘটেছিল, এই সময় ডিজিটালকে তা সবিস্তারে জানান শ্যামাপ্রসাদ হালদার। শ্যামাপ্রসাদ বলেন, 'বি ২ কামরার নয় ও দশ নম্বর বার্থে আমরা ছিলাম। তখন ভোর ৩টে ৩৫। হঠাৎ ঝাঁকুনি আর প্রচণ্ড শব্দে ট্রেনের কামরা হেলে পড়ল। স্ত্রী চিৎকার করতে থাকেন। উঠে দেখি গাড়ি হেলে গিয়েছে। সকলেই চিৎকার চেঁচামেচি করছেন। পিছনের দিকের মোট ১৮ টি কামরা লাইনচ্যুত হয়। চক্রধরপুরের কাছে ওই লাইনের পাশে আরও একটি লাইন তৈরী হচ্ছে। সেই লাইনের নীচে গভীর খাদ। সেখানে পরে গেলে হতাহতের সংখ্যা হত বহু।'
শ্যামাপ্রসাদের আরও সংযোজন, 'স্ত্রী ক্যান্সারের রোগী। তাঁর চিকিৎসার জন্যই মুম্বই যাচ্ছিলাম। দুর্ঘটনার পর রেলের তরফ থেকে জল, বিস্কুট, অ্যাম্বুল্যান্স, এবং মুম্বই পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিশেষ ট্রেনেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন এই মৃত্যুমিছিল আর কতদিন চলবে? ভোরে দিকে যখন দুর্ঘটনাটি ঘটে তখন তন্দ্রাচ্ছন্ন ছিলাম। আমার মাথায় আঘাত লাগে। নিজেরাই কোনওরকমে ট্রেন থেকে নিচে নামি। অনেকে আবার নামতে গিয়ে মাথায় হাতে পায়ে চোট পান। প্রাথমিক চিকিৎসা করাই। এখান থেকেই আমরা আবার মুম্বইয়ের উদ্দেশে রওনা দেব।'
এদিকে এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোশ্যাল সাইটে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, 'ফের একটি ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা! আজ ভোরে ঝাড়খণ্ডের চক্রধরপুর ডিভিশনে বেলাইন হয়েছে হাওড়া-মুম্বই মেল। একাধিক মৃত্যু ও বিপুল সংখ্যক আহতের মর্মান্তিক পরিণতি। আমি জানতে চাই, এটাই কি শাসন? প্রায় প্রতি সপ্তাহে দুঃস্বপ্নের এই সিরিজ, রেলে মৃত্যুর এই অবিরাম মিছিল, আর কতদিন আমরা এমনটা সহ্য করব? কেন্দ্রীয় সরকারের উদাসীনতা কি শেষ হবে না? শোকাহত পরিবার ও আত্মীয়দের প্রতি জানাই সমবেদনা।' এদিকে দুর্ঘটনার পরেই দ্রুততার সঙ্গে উদ্ধার কাজ শুরু করে রেল কর্তৃপক্ষ।