এই সময়: টেগোর পার্ক, মেট্রোপলিটন, চিংড়িঘাটা এবং নিকো পার্ক—একের পর এক জায়গায় জমি-জট কাটতেই বাজেটে রেকর্ড অর্থ বরাদ্দ হয়েছে কবি সুভাষ থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রায় ২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ কলকাতা মেট্রোর অরেঞ্জ লাইনে। আর তার দৌলতেই আগামী বছর মার্চ-এপ্রিল নাগাদ অরেঞ্জ লাইনে সেক্টর-ফাইভ পর্যন্ত যাত্রী পরিবহণে অনুমোদনের আশা দেখছেন কলকাতা মেট্রোর কর্তারা।অতি সম্প্রতি যাত্রীর অভাবে মেট্রোর জোকা-বিবাদী বাগ লাইন অর্থাৎ পার্পল লাইনের দু’টি স্টেশন এবং এই অরেঞ্জ লাইনের কালিকাপুর অর্থাৎ কবি সুকান্ত স্টেশনের বুকিং কাউন্টার বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কবি সুভাষ থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত যাত্রী পরিবহণ চালু হলে তখন হয়তো আর যাত্রী না হওয়ার অভিযোগ থাকবে না মেট্রোর কর্তাদের।
অরেঞ্জ লাইনে ইতিমধ্যে কবি সুভাষ থেকে রুবি পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার অংশে যাত্রী পরিবহণ চলছে। রুবি থেকে মেট্রোপলিটন পর্যন্ত আরও ৪.৫ কিলোমিটার অংশেও যাত্রী পরিবহণের অনুমোদন মিলেছে। বাজেটের পর দিনই রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব সংবাদমাধ্যমে জানিয়ে দেন, জমি-জট বাধা না হলে বাংলায় রেলের প্রকল্পে বরাদ্দ কখনও বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। অরেঞ্জ লাইনের কাজে অবশ্য রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপে জমি-জট আর নেই।
সে কারণেই হয়তো এ বার বাজেটে মেট্রোর এই অরেঞ্জ লাইনে রেকর্ড ১৭৯১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। বরাদ্দ বাড়তেই বেড়েছে দ্রুত কাজ শেষের চাপ। কয়েক মাস আগেও অরেঞ্জ লাইনের ফেজ়-টু হিসেবে রুবি থেকে মেট্রোপলিটন পর্যন্ত অংশে যাত্রী পরিবহণ সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা হচ্ছিল। এ বার ওই ৪.৫ কিলোমিটারের বদলে দৈর্ঘ্য আরও একটু বাড়িয়ে ৮ কিলোমিটার করে রুবি-সল্টলেক সেক্টর-ফাইভ পর্যন্ত অংশে যাত্রী পরিবহণের পরিকল্পনা হচ্ছে। আর তা যদি হয় কলকাতার গণপরিবহণের মানচিত্রই আমূল বদলে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এমনিতে গত কয়েক বছরে যে ভাবে গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে তাতে ইএম বাইপাসে দীর্ঘ যানজট এখন প্রতিদিনের ঘটনা। এমন পরিস্থিতিতে বাইপাস ধরে মেট্রো চলতে শুরু করলে ওই রাস্তায় গাড়ির চাপ অনেকটাই কমবে। এ ছাড়া সল্টলেক সেক্টর-ফাইভ পর্যন্ত এসেছে কলকাতা মেট্রোর গ্রিন লাইন বা ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোও। সুতরাং অরেঞ্জ লাইন ওই পর্যন্ত গেলে বাইপাস ধরে শুধু সল্টলেক ঢোকাই সহজ হয়ে যাবে, এমন নয়, মধ্য কলকাতা, এমনকী হাওড়া যাওয়াও সহজসাধ্য হবে।