স্বাদে অতুলনীয়, জলঙ্গির ইলিশ ইতিহাস, গচ্ছিত রাখা জালে স্মৃতিচারণ মৎস্যজীবীদের
বর্তমান | ৩১ জুলাই ২০২৪
সংবাদদাতা, তেহট্ট: পাঁচ-সাত বছর আগেও তেহট্টের জলঙ্গি নদীতে মিলত প্রমাণ সাইজের ইলিশ। কিন্তু সেসব এখন শুধুই স্মৃতি। সেই স্মৃতি আঁকড়েই রয়ে গিয়েছেন এলাকার ভোজনবিলাসী বাঙালিরা।
স্থানীয় ইলিশপ্রেমী ও মৎস্যজীবীদের সুত্রে জানা গিয়েছে, জলঙ্গি নদীর উৎপত্তি হয়েছে পদ্মা থেকে। পদ্মার সঙ্গে সারা বছর যোগ থাকায় বিভিন্ন ধরনের মাছ মিলত নদীতে। বর্ষায় মিলত ইলিশ। এই সময়ে ইলিশ মাছ ডিম পাড়তে মিষ্টি জলে আসে। ডিম পেড়ে আবার তাঁরা নোনা জলে ফিরে যায়। পদ্মা থেকে ইলিশ জলঙ্গি নদীতে এসে মায়াপুরের কাছে গঙ্গায় চলে যেত। সেই সময় অনেক ইলিশ নদীতে পাওয়া যেত। ইলিশ ধরার জন্য স্থানীয় মৎস্যজীবীরা নির্দিষ্ট এক ধরনের জাল তৈরি করত। যাকে গ্রামীণ ভাষায় জার জাল বা ইলিশ ধরার জাল বলা হতো। সেই জাল নিয়ে সারারাত ইলিশ ধরত এলাকার প্রায় কুড়ি-বাইশ জন মৎস্যজীবী। এখন সেই জাল ঘরে তোলা। মৎস্যজীবী বিকাশ হালদার বলেন, পাঁচ-সাত বছর আগে ইলিশ ধরার জাল আগে থেকেই করে রাখতাম। কারণ আমরা জানি এই সময় ইলিশ পদ্মা দিয়ে ডিম পাড়তে আমাদের এই নদীতে আসবেই। তাই সেই সময় প্রায় তিন-চার হাজার টাকা খরচ করে এই জাল বানিয়ে তৈরি থাকতাম। সারারাত নদীতে পাঁচ থেকে ছ’টা, কোনও কোনও দিন তার থেকে বেশি ইলিশ মাছ পেতাম। প্রায় মাস দুয়েক আমরা নদীতে ইলিশ পেতাম। এখন আর ইলিশ আসে না। আমাদের সেই জাল এখন ঘরে তোলা থাকে। আরেক মৎস্যজীবী মিঠুন হালদার বলেন, আগে পদ্মার সঙ্গে এই নদীর যোগাযোগ ছিল। ফলে বর্ষায় প্রচুর ইলিশ মাছ নদীতে আসত। এখন এই নদীর সঙ্গে পদ্মার সরাসরি যোগ না থাকায় আর ইলিশ মাছ আসে না। আর এবার তো নদীতে জলই নেই। তাই ইলিশ মাছ তো দূরের কথা অন্যান্য মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। যদি আবার পদ্মার সঙ্গে নদীর সরাসরি যোগাযোগ হয় তবে আবার হয়তো ইলিশ মাছ পাওয়া যেতে পারে। আপাতত সেই সুখস্মৃতিই বয়ে বেড়াতে হবে। প্রতীকী ছবি