বাঁকুড়ায় অন্ত্যোদয় অন্নপূর্ণা যোজনা: যুক্ত হবেন আরও প্রায় ৮ হাজার রেশন গ্রাহক
বর্তমান | ৩১ জুলাই ২০২৪
সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: বাঁকুড়ায় প্রায় আট হাজার রেশন গ্রাহক নতুন করে অন্ত্যোদয় অন্নপূর্ণা যোজনায়(এএওয়াই) ঢুকতে চলেছেন। এতে ওই গ্রাহকরা উপকৃত হবেন। জেলা খাদ্য নিয়ামক দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকৃত দরিদ্র এমন পরিবারগুলিকে এসপিএইচএইচ অথবা পিএইচএইচ-এর আওতা থেকে সরিয়ে এনে অন্ত্যোদয় যোজনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। বাঁকুড়ায় প্রতিটি ব্লক থেকে বাস্তব পরিস্থিতির ভিত্তিতে নামের তালিকা তৈরি করে অনুমোদনের জন্য রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। গোটা রাজ্যে একইভাবে অন্ত্যোদয় যোজনায় নতুন করে অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে।
বাঁকুড়া জেলা খাদ্য নিয়ামক শেখ আলিমুদ্দিন বলেন, আমাদের জেলা থেকে মোট ৭হাজার ৭৮৬জনের নাম অন্ত্যোদয় যোজনায় অন্তর্ভুক্তির জন্য রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হয়ে এলে তাঁরা বাড়তি সুবিধা পাবেন।
দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে এসপিএইচএইচ ও পিএইচএইচ ক্যাটাগরির রেশন গ্রাহকরা জনপিছু প্রতি মাসে তিন কেজি চাল ও দু’কেজি করে গম অথবা আটা পান। অন্ত্যোদয় ক্যাটাগরির ক্ষেত্রে পরিবার পিছু প্রতি মাসে ২১কেজি চাল ও ১৪কেজি গম অথবা আটা দেওয়া হয়। সমস্তটাই বিনামূল্যে দুয়ারে রেশন প্রকল্পের মাধ্যমে পাড়ায় পৌঁছে দেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, প্রকৃত গরিব হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা অন্ত্যোদয়ের আওতায় নেই। এনিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তালিকা সংশোধনের দাবি উঠছিল। সম্প্রতি রাজ্যের খাদ্য দপ্তরের তরফে এনিয়ে জেলায় জেলায় নির্দেশিকা পাঠানো হয়। সরেজমিনে বাস্তব অবস্থা খতিয়ে দেখে প্রকৃত গরিবদের চিহ্নিত করার কথা বলা হয়। সেই নির্দেশমতো বাঁকুড়ার তিনটি পুরসভা ও ২২টি ব্লক থেকে নামের তালিকা জেলা খাদ্য নিয়ামকের কাছে পাঠানো হয়। সব মিলিয়ে ৭হাজার ৭৮৬জনের নাম রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হয়ে এলেই ওই গ্রাহকদের অন্ত্যোদয় যোজনার কার্ড দেওয়া হবে।
দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই তালিকায় বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর ও সোনামুখী পুরসভায় যথাক্রমে ১৪৩, ৬৯ এবং ৩০০জন রেশন গ্রাহক রয়েছেন। বাঁকুড়া-১ব্লকে ১২৯জন, বাঁকুড়া-২ব্লকে ১৫৮জন, বড়জোড়ায় ৪৮৩, ছাতনায় ১৭৪, গঙ্গাজলঘাটিতে ৫৯২, মেজিয়ায় ৬৫৩, ওন্দায় ৯২১ ও শালতোড়ায় ৪৮২ জন রয়েছেন। এছাড়াও বিষ্ণুপুরে ১২২, ইন্দাসে ১০৯, জয়পুরে ৫৯১, কোতুলপুরে ১৮২, পাত্রসায়রে ১৮৪, সোনামুখীতে ৭৭৬, হীড়বাঁধে ৮৩, ইন্দপুরে ৫০৬, খাতড়ায় ৩৫৫, রাইপুরে ৩১০, রানিবাঁধে ২২১, সারেঙ্গায় ১১২, সিমলাপালে ৫৯ এবং তালডাংরায় ১০২জন গ্রাহক রয়েছেন। তাঁরা বর্তমানে প্রত্যেকেই এসপিএইচএইচ অথবা পিএইচএইচ যোজনার আওতায় রয়েছেন। সেই অনুযায়ী তাঁরা বরাদ্দ রেশন দ্রব্য পান। অন্ত্যোদয় যোজনায় নাম উঠলে তাঁরা ভীষণ উপকৃত হবেন।
বিষ্ণুপুর শহরের সন্ধ্যা বাগদি, লক্ষ্মী বাউরি, মমতা দাস বলেন, আমাদের পিএইচএইচ কার্ড রয়েছে। পরিবারে আর কেউ নেই। বর্তমানে মাসে ৩কেজি চাল ও ২কেজি করে আটা পাই। তাতে সারা মাস চলে না। অন্ত্যোদয় যোজনায় আনা হলে ২১কেজি চাল ও ১৪কেজি আটা পাবে। তাতে উপকার হবে। একই মন্তব্য করেন ইন্দাসের বিষ্ণুপ্রিয়া হাটি, শিখা সেন প্রমুখেরও।