• মাঝরাতে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে বধূকে ধর্ষণ, পুলিসের জালে দুই প্রভাবশালী
    বর্তমান | ৩১ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, হরিশ্চন্দ্রপুর: অপরাধে যেন লাগাম নেই হরিশ্চন্দ্রপুরে। মাঝরাতে এক বধূকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে পরিত্যক্ত বাগান বাড়িতে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল। গ্রামেরই দুই যুবক এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ। তারা গ্রামে প্রভাবশালী। ঘটনাটি কাউকে জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে তারা। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটে হরিশ্চন্দ্রপুরের মালিওর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। ধর্ষণের অভিযোগে মঙ্গলবার সকালেই দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। তাদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। ঘটনার পর থেকেই আতঙ্কিত ওই বধূ। নির্যাতিতার মেডিক্যাল পরীক্ষাও করা হয়েছে।


    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলাটির বিহারে বিয়ে হয়েছিল। তবে স্বামী সহ বধূ বাপের বাড়ির পাশেই একটি মাটির বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। দুঃস্থ, পরিবার চালাতে সমস্যা হতেই কাজের খোঁজে ভিনরাজ্যে পাড়ি দেন বধূর স্বামী। গত একমাস ধরে তিন সন্তান নিয়ে মাটির ঘরে কোনওরকমে মাথা গুঁজে থাকছেন ওই বধূ। এদিন নির্যাতিতা মহিলা থানায় বসে বলেন, সোমবার গভীররাতে তাঁর কাছে একটি ফোন আসে। তাতে বলা হয়, গোয়াল থেকে গোরু, ছাগল বেরিয়ে গিয়েছে। সেগুলি বাইরে ঘোরাঘুরি করছে। এই কথা শুনে বধূ ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসতেই দুই যুবক তাঁর মুখে কাপড় গুঁজে দেয়। তাকে জোর করে ৫০ মিটার দূরে পরিত্যক্ত এক বাগান বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে দুই যুবক বধূকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। বধূটি সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। রাত দুটোর সময় তাঁর জ্ঞান ফেরে। সেই সময় নির্যাতনকারীরা তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। সকালে বধূ তাঁর মাকে সমস্ত ঘটনা জানান। এরপরই নির্যাতিতার মা ও প্রতিবেশী এক মহিলা তাঁকে থানায় নিয়ে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিস। নির্যাতিতার প্রতিবেশী মহিলা বলেন, অভিযুক্ত দুই যুবক প্রভাবশালী। ভয়ে নির্যাতিতার পরিবার কাউকে কিছু বলতে চায়নি। আমি তাদের সাহস দিয়ে থানায় নিয়ে আসি। পুলিসকে সমস্ত ঘটনা জানানো হয়। অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরই তারা গ্রেপ্তার হয়। হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে মেডিক্যাল করাতে নিয়ে গেলে এক রাজনৈতিক নেতা সেখানে এসে টাকার প্রলোভন দেন। এমনটাই অভিযোগ। বধূকে অভিযোগ তুলে নিতে বলেন। 


    নির্যাতিতার মা বলেন, আমরা গরিব মানুষ। একটা কুড়ে ঘরে কোনওভাবে থাকি। রাতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে আমার মেয়েকে অভিযুক্ত দুই যুবক ধর্ষণ করেছে। ওরা আমার মেয়েকে প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়েছে। মেয়ে ভয়ে প্রথমে কিছুই বলতে চাইছিল না। পরে পুলিসকে সব জানিয়েছে। আমরা আতঙ্কে আছি। আমাদের নিরাপত্তা চাই। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি। 


    এ ব্যাপারে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি মনোজিৎ সরকার বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কি না, তা তদন্ত চলছে।
  • Link to this news (বর্তমান)