সংবাদদাতা, চাঁচল: মালদহের চাঁচল মহকুমার মহানন্দা বাঁধরোডটি বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ৪৮ কিমি বিস্তৃত এই রাস্তাটির বিভিন্ন অংশ খানাখন্দে ভরা। কোথাও বিরাট বিরাট গর্ত। কোথাও পিচের রাস্তা ধসে গিয়েছে রেইনকাটে। কোথাও রাস্তার পিচ উঠে কাদায় ভরেছে। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় বাঁধটিও দুর্বল হয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ গ্রামবাসীর। বর্ষার আগে দায়সারাভাবে ভাঙা ইট দিয়ে গর্ত ভরাট হলেও এলাকাবাসীর ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি। কারণ, বাঁধের উপরে থাকা পুরো রাস্তাটিই সংস্কারের প্রয়োজন। রাস্তার যেখানে-সেখানে যেভাবে বড় বড় গর্ত হয়েছে, তাতে রাতে যে কোনও সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন বাসিন্দা। গাড়িচালকরা দ্রুত রাস্তা মেরামতের দাবি জানিয়েছেন। যদিও রাস্তাটি সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন সেচ দপ্তরের কর্তারা।
চাঁচল মহকুমার কুশিদা মালতীপুর হয়ে রতুয়ার চাতর পর্যন্ত বাঁধরোডটি প্রায় ৪৮ কিমি। এই বাঁধ থেকে মহানন্দা নদী কোথাও পাঁচশো মিটার, কোথাও আবার এককিমি দূর দিয়ে বয়ে চলেছে। প্রায় একদশক ধরে বাঁধের রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বাসিন্দারা। কারণ, চাঁচল,মালতীপুর ও রতুয়া তিনটি বিধানসভার লক্ষাধিক মানুষ এই রোড দিয়ে চলাচল করেন। রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় বাঁধটিও দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। প্রশাসন কিছু কিছু জায়গা সংস্কার করলেও বর্ষার মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে।
তবে বাঁধের পুরো রাস্তা সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন সেচ কর্তারা। দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩০ কিমি বাঁধরোড সংস্কারের জন্য প্রায় ১৬ কোটি টাকা খরচ হবে। তারজন্য টেন্ডার ধরা হয়েছে। অনুমোদন মিললেই কাজ শুরু হবে।
দপ্তরের কর্তারা বলছেন, বর্ষার সময় আপতকালীন মুহূর্তে চলাচলের যোগ্য করে তোলার জন্য কিছু এলাকায় রাস্তা মেরামত করা হচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি, বাঁধটিকে পাকাপোক্তভাবে সংস্কার করতে হবে। বাঁধরোড দিনদিন ধসে যাওয়ায় সেটি সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। ভয়ে গাড়ি ঢুকতে চাইছে না।
স্থানীয়রা বলছেন, ২০১৭ সালে খানপুরে এই বাঁধ রোডের প্রায় ৫০০ মিটার ভেঙে মহানন্দার জল ঢুকে গিয়েছিল। সেবার বাঁধ ভেঙে এলাকার বিস্তৃত এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এলাকার বহু কৃষকের ফসল নষ্ট হয়ে যায়। দশবছর ধরে বাঁধের রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় এবং বাঁধটি দুর্বল হয়ে বিভিন্ন অংশে ধসে যাওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। চন্দ্রপাড়ার মহম্মদ আলি জিন্নাহ বলেন, প্রতিবছর বর্ষার সময় বাঁধরোডটিতে ধস নামে। প্রশাসন দায়সারাভাবে রাস্তার গর্ত শুধু ভরাট করে দিচ্ছে। মহম্মদের দাবি, বাঁধের পুরো রাস্তাটি সংস্কার করা উচিত। খানপুরের এমাদুর রহমানের কথায়, অল্প অল্প করে অস্থায়ীভাবে সংস্কার হচ্ছে। বাসিন্দাদের দাবি, প্রশাসনকে একাধিকবার জানানো হয়েছে। কিন্তু পুরো রাস্তা সংস্কার হচ্ছে না। এদিকে দিনদিন বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়ছে। মালদহের সেচ দপ্তরের (মহানন্দা) এক আধিকারিক বলেন, সেখানে ৩০ কিমি বাঁধরোড সংস্কারের জন্য টেন্ডার ধরা হয়েছে। অনুমোদন এলেই কাজ শুরু হবে। ( নিজস্ব চিত্র)