এখনও ধৃত তিন, নকশালবাড়ি জমিকাণ্ডে আরও কয়েকজন শীঘ্রই গ্রেপ্তার: এসপি
বর্তমান | ৩১ জুলাই ২০২৪
সংবাদদাতা, নকশালবাড়ি: নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ গ্রেপ্তারের পর আরও কয়েকজনকে ডেকে ইতিমধ্যেই জেরা করেছে পুলিস। কয়েকজন জমি মাফিয়া রয়েছে পুলিসের নজরে। দার্জিলিংয়ের পুলিস সুপার প্রবীণ প্রকাশ জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের শীঘ্রই জালে তোলা হবে। এদিকে, বিএলআরও সহ ভূমিদপ্তরের আধিকারিকদের রদবদলের পর থমকে আছে সরকারি জমি পুনরুদ্ধারের কাজ। নতুন করে একসপ্তাহে কোথাও অভিযানে গিয়ে বসানো হয়নি সরকারি বোর্ড।
প্রসঙ্গত, ১২ জুলাই নকশালবাড়ির বিএলআরও বিপ্লব হালদার বদলির আগে হাতিঘিষা গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৯টি প্লটের ৪২.৪৫ একর খাস জমির হিসেব দিয়ে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে থানায় অভিযোগ দায়ের করে যান। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে ১৯ জুলাই কেষ্টপুরের দুই জমি মাফিয়াকে পুলিস গ্রেপ্তার করে। দু’দিন বাদে একই মামলায় গ্রেপ্তার হন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আসরাফ আনসারি।
ইতিমধ্যেই পুলিস কয়েকজনকে নকশালবাড়ি থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে। পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন এক কর্মাধ্যক্ষকেও ডাকা হয়েছিল। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের পর অনেকেই এলাকা ছেড়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি। যদিও তদন্তকারী পুলিস আধিকারিকরা জানিয়েছেন, কিছু তথ্যপ্রমাণ হাতে এলেই বাকিদেরও ধরা হবে।
দার্জিলিংয়ের পুলিস সুপার বলেন, ‘পূর্ত কর্মাধ্যক্ষকে হেফাজতে নিয়ে বেশ কয়েকজনের নাম পেয়েছি। তাঁদের শীঘ্রই গ্রেপ্তার করা হবে। ভূমিদপ্তরের অভিযোগে দেওয়া নাম ছাড়াও আমরা কয়েকজনের হদিশ পেয়েছি। যারা জমির রেকর্ড থেকে জাল নথি তৈরির বিষয়ে জড়িত। এখনই তাদের নাম প্রকাশ্যে আনছি না।’
উল্লেখ্য, গতবছরের ডিসেম্বর মাসে হাতিঘিষার সেবদেল্লাজোতে জাল খতিয়ান দিয়ে সরকারি জমি দখল ও বিক্রির অভিযোগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিযোগ জানিয়েছিলেন আসরাফ। এরপর একই অভিযোগ নিয়ে ৭ জুলাই ফের সেবদেল্লার পাঁচটি দাগ ও বড় ঝাড়ুজোতের দু’টি দাগ সহ এলাকার বালি পাচারে জনপ্রতিনিধিদের যোগসাজসের অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন। এরপর নকশালবাড়ি ভূমিদপ্তর নড়েচড়ে বসে। হাতিঘিষায় সাড়ে ছ’একর সরকারি জমি উদ্ধারও করে। অভিযোগ হয় আনসারির নামেও। আনসারির জমিও উদ্ধার করে প্রশাসন। তবে আনসারি গ্রেপ্তারের পর থেকে বন্ধ জমি পুনরুদ্ধারের কাজ।
দপ্তরের আধিকারিকেদের রদবদলের জেরে প্রক্রিয়াটি আপাতত থমকে। বিএলআরও দেবরাজ বাগে বলেন, ‘সবে কাজে যোগ দিয়েছি। সব ফাইল খতিয়ে দেখছি।’
এদিকে চলতি সপ্তাহেই নকশালবাড়ি থেকে তিনজন রাজস্ব আধিকারিক বদলি হচ্ছেন। নকশালবাড়ি ভূমিদপ্তরের আধিকারিকদের রদবদলে পুরো কাজটি থমকে যাওয়ার আশঙ্কা ওয়াকিবহাল মহলের। অন্যদিকে, আসরাফ গ্রেপ্তার হওয়ায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি উঠেছে তৃণমূলের অন্দরে। যদিও রাজ্য নেতৃত্বর নির্দেশ ছাড়া দল এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নিতে চায় না বলে তৃণমূলের নকশালবাড়ির নেতারা জানিয়েছেন।