সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: জমিকাণ্ডে মহম্মদ আহিদ ওরফে চুটকি গ্রেপ্তার হতেই ফুলবাড়িতে তৃণমূল কংগ্রেসের পুরনো ও বসে যাওয়া নেতা-কর্মীদের মধ্যে চাপা উল্লাস, স্বস্তি। পাশাপাশি গ্রেপ্তারের আশঙ্কায় আতঙ্কিত নব্য তৃণমূলীদের একটি অংশ। যদিও এনজেপি থানা চত্বরে দাঁড়িয়ে মঙ্গলবার চুটকি বলেন, আমি জমির দালালি ও সরকারি জমি দখল করিনি। আমি নির্দোষ। তাহলে কেন গ্রেপ্তার প্রশ্নের উত্তরে বলেন, পুলিস যাকে খুশি গ্রেপ্তার করতে পারে। আমার উপর সব কিছু চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিস জানিয়েছে, এদিন ধৃতকে আদালতে তুলে ১০ দিনের হেফাজতে পাওয়া গিয়েছে। দেবাশিস প্রামাণিক, গৌতম গোস্বামী গ্রেপ্তার হওযার পর কিছুদিন বন্ধ ছিল গ্রেপ্তার পর্ব। তাতে বিতর্কিত তৃণমূল নেতারা কিছুটা স্বস্তিবোধ করেছিলেন। সোমবার রাতে আরও এক তৃণমূল নেতা চুটকি ও তার শাগরেদ মহম্মদ নাসিরকে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ গ্রেপ্তার করে। তাতে ফুলবাড়িতে জমির অবৈধ কারবারে যুক্ত তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তারের আশঙ্কায় আতঙ্কিত। সকলের প্রশ্ন, এর পর কে?
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, অবৈধভাবে নকল নথিপত্র বানিয়ে সরকারি জমি দখলের অভিযোগে চুটকিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শিলিগুড়ি পুরসভার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আশিস দাস নামে এক ব্যক্তি এই অভিযোগ দায়ের করেন এনজেপি থানায়। তার ভিত্তিতে সোমবার রাতে কামরাঙাগুড়িতে নিজের বাড়ি থেকে চুটকিকে গ্রেপ্তার করা হয়। একসময় সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন করতেন। ২০০৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএম টিকিট না দেওয়ায় নির্দল প্রার্থী হয়ে জেতেন চুটকি। ২০১৪ সালে তৃণমূলে আসার পর তাঁর রকেট গতিতে উত্থান হয়। প্রথম থেকেই বিতর্কিত চুটকি। তাঁর এই উত্থান দলের একটি অংশ মেনে নিতে পারেনি। তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি জমি দখল, নদীর চর বিক্রি করে দেওয়া, ঘাট দখল করে বালি-পাথরের অবৈধ কারবার সহ অসংখ্য অভিযোগ ছিল। তবু চুটকি এলাকার শেষ কথা। ফুলবাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে দল এতদিন ব্যবস্থা না নেওয়ায় তৃণমূলের বহু পুরনো নেতা-কর্মী বসে গিয়েছেন। তাতেও বন্ধ হয়নি চুটকির অবৈধ কারবার। অভিযোগ, ফুলবাড়িতে দূরদর্শন কেন্দ্রের সামনে সরকারি জমি দখল করে গোডাউন বানিয়েছেন। জোড়াপানি নদীর চর দখল করে বসতি বসিয়ে মোটা টাকা কামিয়েছেন। উত্তরকন্যা’র বিপরীতে মহানন্দা নদীর ঘাট অবৈধভাবে দখল করে বালি-পাথরের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন।