বাইপাসের পানশালায় হামলা: গ্রেপ্তার ২, মূল অভিযুক্ত ও তার সহযোগীরা সুন্দরবনে ফেরার
বর্তমান | ৩১ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মধ্যরাতে ইএম বাইপাসে টেগোর পার্কের পানশালায় তাণ্ডব চালানোর ঘটনায় তদন্তে নেমে দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করল আনন্দপুর থানার পুলিস। ধৃতদের নাম দীপঙ্কর দাস (৩৬) ও মাহিন্দ্র প্রসাদ গুপ্ত (৩৫)। তারা দু’জনই আনন্দপুর থানা এলাকার রবীন্দ্রনাথ কলোনির বাসিন্দার। লালবাজার সূত্রে খবর, পানশালার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হয়। যদিও পানশালায় তাণ্ডব ও গাড়ি-বাইক ভাঙচুরের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় দাস ও তার সঙ্গী সাথীরা ফেরার। পুলিস সূত্রের খবর, তারা সুন্দরবনে পালিয়ে গিয়েছে। তাদের ধাওয়া করে কলকাতা পুলিসের টিম গিয়েছে সেখানে। ফেরারদের বাংলাদেশে চম্পট দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা রয়েছে? এপ্রসঙ্গে কলকাতা পুলিস জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। পলাতকদের ট্র্যাক করছেন তদন্তকারীরা।
সোমবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ বাইপাসের ধারে একটি পানশালায় আচমকাই হামলা চালায় প্রায় ১৪-১৫ জনের একটি দুষ্কৃতীদল। অভিযোগ, প্রত্যেকে মুখে কালো কাপড় বেঁধে বাইকে চেপে ঘটনাস্থলে আসে। এরপরেই পানশালার বাইরে পার্ক করা একের পর এক গাড়ি ও বাইকে ভাঙচুর চালায়। অভিযোগ, আগ্নেয়াস্ত্র সঙ্গে ছিল তাদের। এরপরেই আনন্দপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন পানশালার মালিক। তার ভিত্তিতে মামলা রুজু করে পুলিস। কী কারণে হামলা? খোঁজ নিয়ে পুলিস জানতে পারে কয়েকদিন আগে পানশালার বাউন্সাররা মিলে স্থানীয় এক যুবককে বেধড়ক মারধর করে। পানশালায় ঢোকা নিয়ে বিবাদ বাধে দু’পক্ষের। তার জেরেই সোমবারের ঘটনা প্রতিশোধমূলক বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।
অন্যদিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আরও একটি বিষয় প্রকাশ্যে এসেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, পানশালাটি রাত ২টো পর্যন্ত খোলা থাকে। যা সরকারি নিয়মবিরুদ্ধ। এছাড়াও সেখানে অসামাজিক কাজকর্ম চলত বলেও অভিযোগ। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে পানশালা কর্তৃপক্ষ। এপ্রসঙ্গে স্থানীয় বরো চেয়ারম্যান ও ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সুশান্ত কুমার ঘোষ জানান, পানশালাটি সরকারি নিয়ম মেনে চলে না। নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও খোলা থাকে। স্থানীয় মানুষ বিরক্ত। বিষয়টি নিয়ে দু’বছর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কলকাতার পুলিস কমিশনারকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। লালবাজার সূত্রে খবর, এই পানশালা নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে। অসামাজিক কাজকর্মের অভিযোগের ভিত্তিতে সেখানে ২০২১ ও ২০২২ সালে দু’বার রেইড চালানো হয়। তবে এবারের হামলা কেন? তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।