কালীঘাটের পাশে আদিগঙ্গার কিছু ঘাট সাজছে নতুন চেহারায়
এই সময় | ৩১ জুলাই ২০২৪
এই সময়: কালীঘাট মন্দিরের আশপাশে আদিগঙ্গার পাড়ে যে সব প্রাচীন ঘাট রয়েছে, সেগুলোকে নতুন ভাবে সংস্কার করে সাজিয়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। ওই পরিকল্পনারই অঙ্গ হিসেবে কালীঘাট ব্রিজের পাশে দু’টি ঘাটকে আলো দিয়ে সাজানো হবে। এর মধ্যে একটি হলো, গায়ত্রীদেবী ঘাট এবং অন্যটি হলো, কল্পতরু ঘাট। ঘাটগুলোকে দৃষ্টিনন্দন করে তুলতে সামনে বসানো হবে গ্লোসাইন বোর্ড। সব মিলিয়ে ৩০ লক্ষ টাকা খরচ হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।কালীঘাট মন্দিরের পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে আদিগঙ্গা। এক সময়ে কালীঘাট মন্দিরে যাঁরা পুজো দিতে আসতেন, তাঁদের অনেকেই পুজো দেওয়ার আগে স্নান করতেন ওই ঘাটগুলোর কোনও একটায়। আশপাশের বাসিন্দারাও ঘাটগুলো নিয়মিত ব্যবহার করতেন। আদিগঙ্গা মজে যাওয়ায় সেই ঘাটগুলো আর আগের মতো ব্যবহার হয় না। দীর্ঘদিন সংস্কার না-হওয়ায় ঘাটগুলোরও এখন জরাজীর্ণ দশা।
অথচ কালীঘাট মন্দিরের মতো এই সব ঘাটের সঙ্গেও জড়়িয়ে রয়েছে অনেক পুরোনো ইতিহাস। শোনা যায়, এক সময় রানি রাসমণি কালীঘাট মন্দিরে নিয়মিত পুজো দিতে আসতেন। তার আগে তিনি স্নান করতেন আদিগঙ্গায়। সে জন্য তিনি আদিগঙ্গার পাড়ে নিজস্ব ঘাট বানিয়েছিলেন। এ রকম অজস্র ঘাট রয়েছে আদিগঙ্গার পাড়ে।
পুরসভা সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই কালীঘাট সদর ঘাট সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। আর সেই কাজ করতে গিয়ে ঘাটে পুরোনো আমলের পাথরের সিঁড়ি বেরিয়ে পড়ে। পুরোনো দিনের ঐতিহ্য ধরে রাখতে লাল রংয়ের স্যান্ডস্টোন দিয়ে সেই সিঁড়ি মেরামত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা।
কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন, ‘এক সময়ে আমরা আদিগঙ্গায় কত সাঁতার কাটতাম! মুখ্যমন্ত্রী নিজেও নিয়মিত আদিগঙ্গায় সাঁতার কাটতেন। কিন্তু এখন আদিগঙ্গায় নামার মতোই পরিস্থিতি নেই। সে জন্য ঘাটগুলোও ঠিকমতো ব্যবহার হয় না।’
মেয়র জানিয়েছেন, আদিগঙ্গার জলে দূষণ কমাতে পুরসভার তরফে একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আদিগঙ্গায় জলের প্রবাহ বাড়াতে পলি তোলার কাজ চলছে। কেউ যাতে নোংরা-আবর্জনা না-ফেলে, সে জন্য আদিগঙ্গার দুই পাড় তারের জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হচ্ছে। ঘাটগুলোকে পরিষ্কার রাখতে নিয়োগ করা হয়েছে আলাদা সাফাইকর্মী। সেই সঙ্গে তৈরি হচ্ছে নতুন সুয়ারেজ পাম্পিং স্টেশন-ও।