জলের অপচয় রুখতে নয়া আইন আনছে রাজ্য, বিধানসভায় ঘোষণা মন্ত্রীর
প্রতিদিন | ০১ আগস্ট ২০২৪
গৌতম ব্রহ্ম: জল অপচয় রুখতে কড়া হচ্ছে রাজ্য। নয়া বিল আসছে বিধানসভায়। বুধবার জানিয়ে দিলেন রাজ্যের জনস্বাস্থ্য, কারিগরি ও পূর্ত দপ্তরের মন্ত্রী পুলক রায়। মন্ত্রী বলেন,”মোটর দিয়ে বহু মানুষ জল তুলছেন। কেউ নার্সারি, কেউ হ্যাচারি, কেউ তা রেস্তোরাঁয় ব্যবহার করছে। জলের অপচয় বন্ধে এই সদনে বিল নিয়ে আসা হবে।” পদ্ম শিবিরের বিধায়কদের উদ্দেশ্য করে এদিন মন্ত্রী বলেন, ‘‘মানুষকে সচেতন করার দায়িত্ব আমাদের সকলকেই নিতে হবে।’’
এদিন বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে শাসক ও বিরোধী দলের একাধিক বিধায়ক প্রশ্ন করেন পুলক রায়কে। প্রথম প্রশ্ন ছিল আর্সেনিক ও ফ্লোরাইড দূষণ নিয়ে। জবাবে মন্ত্রী বলেন, “রাজ্যের কিছু কিছু ব্লককে ভূগর্ভস্থ জলের আর্সেনিক দূষণ ও ফ্লোরাইড দূষণ কবলিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আটটা জেলার ৮৩ টি ব্লক আর্সেনিক কবলিত। চারটে জেলার ৪৩টি ব্লক ফ্লোরাইড কবলিত।” বেশকিছু অঞ্চলে জলে আয়রন বেশি কথাও এদিন মেনে নেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের মন্ত্রী। বলেন, “এই নিয়ে গবেষণা এবং অনুসন্ধান চলছে।”
মন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যে মোট ২১৭ জলপরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে। তার মধ্যে ২১৬ টি এনএবিএল স্বীকৃত। এদিন জল জীবন মিশন প্রকল্প নিয়েও একাধিক প্রশ্নের উত্তর দেন মন্ত্রী। জানান, ‘‘এখনও পর্যন্ত ৯০ লক্ষ পরিবারকে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। সময়ে জমি পেলে এই প্রকল্প সময়েই শেষ হবে। পরিশ্রুত পানীয় জল সরবরাহে দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ পরিবারের নিরিখে এই মুহূর্তে তৃতীয় স্থানে। আর চলতি অর্থবছরে জল সংযোগ দেওয়ায় পশ্চিমবঙ্গ প্রথম স্থানে।” এদিন জল জীবন মিশন নিয়ে বলতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের শেয়ার নিয়েও কটাক্ষ করেন মন্ত্রী। বলেন, “এই প্রকল্পে কেন্দ্র এবং রাজ্যের শেয়ার ফিফটি ফিফটি। কিন্তু রাজ্যকে জমি কিনতে হয়, রক্ষণাবেক্ষণের খরচ করতে হয়।” তিনি পরিসংখ্যান দিয়ে জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার জল স্বপ্ন প্রকল্পে ১২ হাজার ১৭ কোটি টাকা দিয়েছে। রাজ্য সরকার খরচ করেছে ১১ হাজার ৮১২ কোটি টাকা। মন্ত্রীর দাবি, ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলার সব পরিবারে জল পৌঁছে দেবে রাজ্য সরকার।
এদিন মন্ত্রী উত্তরবঙ্গের জল জল সমস্যা নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেশ করেন বিধানসভায়। শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা বিরোধী দলের মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ডাবগ্রাম ও সংলগ্ন এলাকায় ৫২.৩৫ কোটি ব্যয়ে মোট পাঁচটি নলবাহিত পানীয় জল প্রকল্পের কাজ চলছে। এর দ্বারা ৩১ হাজার ১৩৭টি পরিবার উপকৃত হবে। প্রকল্পগুলি ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে রূপায়িত হবে বলে জানিয়ে দেন মন্ত্রী। এদিন জল জীবন মিশনে জমি অধিগ্রহণের ব্যাপারে বিজেপি বিধায়কদের থেকেও সাহায্য চান পুলক রায়। এদিন বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউরি জানান, বিজেপি করার অপরাধে তাঁর এলাকার অনেককে জল সংযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। উত্তরে মন্ত্রী জানান, নির্দিষ্ট অভিযোগ এলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জল সংযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এদিন স্কুলগুলিতে ‘আরও’ প্ল্যান্ট খারাপ হয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ ওঠে। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও মেনে নেন, এই সমস্যাটি মন্ত্রীর গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত।