অস্ত্র রাখার নিদান দিয়ে বিতর্কে বিজেপি জেলা সভাপতি
বর্তমান | ০১ আগস্ট ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: তৃণমূলের হাত থেকে বাঁচতে ঘরে ঘরে অস্ত্র রাখার নিদান দিলেন বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি শাখারভ সরকার। তাঁর এই হুঁশিয়ারির পর রীতিমতো রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, যারা আমাদের ঠ্যাং ভাঙবে বলছে তাদের যদি আমরা পাল্টা ঠ্যাং ভাঙি, তাহলে একটি ঠ্যাং বাংলাদেশ এবং অপর একটি ঠ্যাং পাকিস্তানে গিয়ে পড়বে।
উল্লেখ্য, তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বিজেপির দুই বিধায়ক যাঁরা বাংলা ভাগ চাইছেন, তাঁদের ঠ্যাং ভেঙে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। বুধবার হুমায়ুনের বক্তব্যের বিরোধিতা করে সাংবাদিক সম্মেলন করেন বহরমপুরের বিজেপি সভাপতি। শাখারভবাবু সেই সম্মেলন থেকে নাম না করে হুমায়ুনকে ‘হনুমান’ বলে তোপ দেগেছেন। বিজেপি সভাপতি বলেন, দু’দিন ধরে দেখছি হনুমানের উৎপাত হয়েছে এই জেলায়। তিনি আবার পরপর দু’দিন বড়াই করে বলছেন, আমাদের বিধায়কদের নাকি ঠ্যাং ভেঙে দেবেন। তারপরেও তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে কোনও পুলিস-প্রশাসন আইনি ব্যবস্থা নেয় না। আইন যদি ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে বসে থাকে, তাহলে আমরাও এবার দেখব।
শাখারভ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ভারতীয় জনতা পার্টি এখনও আছে। কেন্দ্রে এখন মোঘল সাম্রাজ্য হয়নি বা মনমোহনের সাম্রাজ্য নেই। এখন মোদি সাম্রাজ্য চলছে। আমি সমস্ত তৃণমূল বিধায়কদের বলছি, ভারতীয় জনতা পার্টির একজন বিধায়কের ঠ্যাং ভাঙা তো দূরের কথা। একজন বিজেপি বা সনাতনী কোনও কার্যকর্তাকে যদি তৃণমূল স্পর্শ করে, তাহলে মুর্শিদাবাদ জেলাতে কী পরিণতি হবে সেদিন তৃণমূল টের পাবে। সবরমতী এক্সপ্রেসের কথা মানুষ ভুলে গিয়েছে। কিন্তু গোধরার কথা মানুষ মনে রেখেছে। তাই বলব, আপনারা বাড়িতে অস্ত্র রাখুন। আমিও রাখি। আমি খালি হাতে থাকি না। যদি কেউ মনে করেন মুর্শিদাবাদ থেকে সনাতনীদের তুলে দিয়ে আর একটা কাশ্মীর বানাব, সেটা হবে না। অস্ত্র রাখার নিদানের পর শাখারভ অবশ্য বলেন, আইনে যে অস্ত্র বাড়িতে রাখতে বাধা নেই, সেই অস্ত্র আত্মরক্ষার জন্য রাখুন। তাতে সুরক্ষিত থাকা যাবে।
বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা অশোক দাস পাল্টা বলেন, বিজেপি মনে করছে তারা এই জেলার হিন্দুদের ত্রাতা। বাস্তবে হিন্দুদের মধ্যে যারা সাম্প্রদায়িক মনস্ক তারা সাম্প্রদায়িক হিন্দু। আবার তার বাইরে বহু অসাম্প্রদায়িক হিন্দু রয়েছে। যারা মনে করছে হিন্দু ধর্ম বিপন্ন হয়ে গেল। তারা শুনে রাখুন হিন্দু ধর্মের জন্ম বিজেপির জন্মের কয়েক হাজার বছর আগে। এখন বিজেপি আসলে সাম্প্রদায়িক হিন্দু হয়ে এই ধর্মকেই কালিমালিপ্ত করছে। তারা একইভাবে সব মুসলিমকে সাম্প্রদায়িক কালিমা দেওয়ার চেষ্টা করছে। এটা অন্যায়। মুর্শিদাবাদ জেলা শান্তি সম্প্রীতি ও সৌভ্রাতৃত্বের জেলা।
এখানে আমরা হিন্দু, মুসলিম ও খ্রিস্টান সকলে একসঙ্গে মিলেমিশে থাকি। আগামীতেও থাকব। - নিজস্ব চিত্র