কাঁকসার বনকাটি পঞ্চায়েতে ক্যানালের উপর নির্মাণ, প্রভাব পড়ছে কৃষিকাজে
বর্তমান | ০১ আগস্ট ২০২৪
সংবাদদাতা, মানকর: কাঁকসার বনকাটি পঞ্চায়েতে বেহাল সেচ ক্যানাল। ক্যানেলের হাল ফেরাতে পঞ্চায়েতের তরফে কাঁকসা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর এবং ব্লক প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়। তারই ভিত্তিতে বুধবার ব্লক প্রশাসন এবং ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিকরা এলাকা পরিদর্শন করেন। অভিযোগ, সেচ ক্যানেল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে এলাকায় কৃষিকাজে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। প্রায় তিন হাজার বিঘা জমির চাষ এই ক্যানেলটির উপর নির্ভর করত। কিন্তু অবৈধ নির্মাণের ফলে ক্যানেলটির বেহাল দশা হয়েছে।
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ১১ মাইল এলাকা থেকে শুরু হয়ে ক্যানালটি পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। এদিন সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ক্যানালের উপর একাধিক নির্মাণ হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সোমনাথ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ক্যানেলের ওপর বনকাটি ছাড়াও বসুধা, বিলপাড়া, ডাঙ্গাল সহ একাধিক এলাকার বাসিন্দারা নির্ভর করেন। এর জলে এলাকায় চাষ হতো। কিন্তু প্রতিদিন আবর্জনা ফেলে ক্যানালটি বন্ধ করা হচ্ছে। তার উপর একাধিক জায়গায় অবৈধ নির্মাণ হয়েছে। আমরা লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করেছি। তিনি জানান, শুধু সেচের কাজে নয়, জল নিকাশির ক্ষেত্রেও এই ক্যানালটির গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে বেহাল দশা হওয়ায় বৃষ্টির জল নিকাশিতে সমস্যা হচ্ছে। জল জমে থাকায় এলাকায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। এদিন ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিকরা এলাকা পরিদর্শনের সময় ক্যানেলের উপর নির্মাণ কাজ করেছেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন। নথিও দেখতে চান তাঁরা।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা বিকাশ মৈত্র বলেন, আমি যখন জায়গা কিনেছিলাম, তখন ক্যানেল ছিল না। পরে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ক্যানেলটি করা হয়। তবে ক্যানেলে যাতে জল যেতে অসুবিধা না হয়, আমরা তার খেয়াল রেখেছি। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, প্লাস্টিক ও আবর্জনা ফেলে নষ্ট করা হচ্ছে সেচ ক্যানালটিকে। ক্যানালের দু’দিকে ঝোপ জঙ্গলের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জমা জলে মশার উপদ্রব বাড়ছে।
ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিক অভিষেক হাজরা বলেন, ক্যানেলের উপর একাধিক নির্মাণ হয়েছে। ওঁদের কাছে কাগজপত্র চেয়ে পাঠিয়েছি। তদন্ত করা হচ্ছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। বিজেপি নেতা রমন শর্মা বলেন, তৃণমূল রাজত্বেই দখল হয়েছে, আবার তৃণমূলই অভিযোগ করছে। এটাই রাজ্যের চরিত্র। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে পঞ্চায়েত প্রধান তাবাসুম খাতুন বলেন, আমাদের সরকারের আমলে বেনিয়ম রেওয়াত করা হয় না। তাছাড়া ক্যানেলটি চালু হলে সকলের উপকার হবে।-নিজস্ব চিত্র