স্কুলে আগ্রহ বাড়াতে পড়ুয়াদের জন্মদিন পালন করলেন শিক্ষকরা
বর্তমান | ০১ আগস্ট ২০২৪
সংবাদদাতা, করিমপুর: ওঁদের অনেকেই নিজের জন্মদিনের তারিখ বা সাল জানেন না। আবার ছেলেমেয়ে কবে জন্মেছে, তাও মনে নেই বেশিরভাগ বাবা-মায়ের। যে কারণে ওঁদের বাড়িতে ঘটা করে জন্মদিন পালন করা হয় না। সেই সব ছেলেমেয়ের জন্মদিন পালন করলেন স্কুলের শিক্ষকরা। বুধবার স্কুলের তিনজন ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে একসঙ্গে কেক কেটে তাদের জন্মদিন পালন করা হল। করিমপুর-১ ব্লকের রানিনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই আয়োজন করা হয়েছিল। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা প্রত্যন্ত এলাকার ওই স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে হাতেগোনা কয়েক জন ছাড়া প্রায় সকলেই খুব গরিব পরিবারের সন্তান। পড়ুয়াদের অভিভাবকরা কেউ দিনমজুর, কেউ কৃষিকাজ করেন। ওই সব বাড়িতে কখনও সন্তানদের জন্মদিন পালন হয় না। এ বার সেই পড়ুয়াদের জন্মদিন পালন করলেন তাদের স্কুলের শিক্ষকরা।
স্কুলের এক শিক্ষক জানান, স্কুলে পড়ুয়াদের উপস্থিতি কমে যাওয়ায় শিক্ষকরা আলোচনা করে এই জন্মদিন পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ঠিক হয়েছে একটি মাসে প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির যে সব ছাত্রছাত্রীর জন্মদিন, সেই মাসের একটা নির্দিষ্ট দিনে তারা সবাই স্কুলে একসঙ্গে একটি বড় কেক কাটবে এবং অন্যান্য দিনের মতো স্কুলের সকল ছাত্রছাত্রীকে মিড ডে মিল খাওয়ানো হবে। আর বার্থ ডে কেক ও মিষ্টির খরচ বহন করবেন শিক্ষকরা। স্কুলের প্রধান শিক্ষক পীযূষ জোয়ারদার বলেন, স্কুলের প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে বর্তমানে ৩৯ জন পড়ুয়া রয়েছে। গত জুন মাস থেকে এভাবে পড়ুয়াদের জন্মদিন পালন করা শুরু হয়েছে। গত মাসে পাঁচজন পড়ুয়ার জন্মদিন পালিত হয়েছিল। তারপর থেকে স্কুলে আসার প্রবণতা বেড়েছে। জুলাই মাসে তিন জন ছাত্রছাত্রীর জন্মদিন। সেই মতো মাসের শেষ বুধবার ওই পড়ুয়াদের নিয়ে কেক কাটা ও সকলে মিলে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করা হল। এ দিন জন্মদিন উপলক্ষ্যে পদ ছিল সাদা ভাত ও সয়াবিন আলুর তরকারি। স্কুলের শিক্ষকরা আরও বলেন, পিছিয়ে পড়া এলাকার ছেলেমেয়েদের স্কুলে আসার ঝোঁক বাড়াতে এই উদ্যোগ। স্কুলের এমন উদ্যোগে খুশি ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা। বুধবার যাদের জন্মদিন পালিত হল সেই মেঘলা প্রামাণিক, শুভঙ্কর সরকার বলে, আমাদের বাড়িতে জন্মদিনের অনুষ্ঠান হয় না। শিক্ষকরা আমাদের জন্য এই অনুষ্ঠান করায় খুব ভালো লাগছে।
শুভঙ্করের মা সাধনা সরকার বলেন, ছেলের ছয় বছর বয়স হল। কখনও ওর জন্মদিন পালন করা হয়নি। করিমপুর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সোমদেব মজুমদার জানান, স্কুলের এমন ভাবনা প্রশংসার যোগ্য। বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া এলাকায় অন্য স্কুলগুলো এমন আয়োজন
করলে স্কুলছুট সংখ্যা কমবে এবং বাচ্চাদের স্কুলে আসার ঝোঁকও