• বেয়াড়া ডেঙ্গু, উদ্বিগ্ন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা
    বর্তমান | ০১ আগস্ট ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: ভারী বৃষ্টি নেই। মাঝেমধ্যে ঝিরঝিরে শ্রাবণ ধারা নামছে। নালা বা অন্য কোথাও জল জমছে। স্রোত না থাকায় জল বয়ে যেতে পারছে না। এটাই ডেঙ্গুর লার্ভা জন্মানোর অদর্শ পরিবেশ বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্যদপ্তরের আধিকারিকরা। কয়েকদিন ধরে জেলায় ডেঙ্গু দাপিয়ে ব্যাটিং করছে। চলতি মরশুমে জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। তবে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্তা বর্ধমান শহর নিয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগে রয়েছেন। শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে এদিন নতুন করে আরও একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার রসিকপুরে ১২জন ডেঙ্গু আক্রন্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল। ওই এলাকায় আরও অনেকেই জ্বরে আক্রান্ত রয়েছেন। বুধবার সুডার একটি দল কলকাতা থেকে ওই এলাকায় আসে। ওই দপ্তরের অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি জলি চৌধুরী এলাকা পরিদর্শন করেন। তিনি সমস্ত ওয়ার্ডের ডেঙ্গু কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। 


    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কীভাবে এলাকায় গিয়ে প্রচার করতে হবে সেটা ডেঙ্গু কর্মীদের অনেকেই বলতে পারেননি। কীভাবে কোথায় ডেঙ্গুর লার্ভা জন্মায় সেটাও তাঁরা স্পষ্ট করতে পারেননি। তা দেখে আধিকারিকরা অবাক হয়ে যান। এক আধিকারিক বলেন, ওই কর্মীদের ডেঙ্গু নিয়ে কোনও অভিজ্ঞতাই নেই। তারা এলাকায় কীভাবে কাজ করেছে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ডেঙ্গু কর্মীদের নিয়ে আলাদাভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশ সরকার বলেন, রসিকপুরে এদিন বিশেষ অভিযান চালানো হয়েছে। শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের আশাকর্মীদের ওই এলাকায় পাঠানো হয়েছিল। সাফাইকর্মীরা সমস্ত নালা পরিষ্কার করেছেন। এলাকার বাসিন্দাদের রক্ত পরীক্ষা করার ব্যবস্থা হয়েছে। লাগাতার সাফাই অভিযানও চলবে। শহরের বাসিন্দাদেরও সহযোগিতা করতে হবে। অনেক পরিবার বাড়িতে জল জমিয়ে রাখছে। এখন সচেতনতামূলক প্রচার করা হচ্ছে। এরপর জরিমানা করা হবে। শহরে লিফলেট ছড়িয়েও প্রচার করা হচ্ছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়রাম হেমব্রম বলেন, ভারী বৃষ্টি হলে এক জায়গায় জল জমে না। ডেঙ্গুর লার্ভা ভেসে যায়। এবছর সেরকম বৃষ্টি হচ্ছে না। মাঝেমাঝে অল্প বৃষ্টি হচ্ছে। জল জমে থাকার কারণে লার্ভা বাড়ছে। জেলার বাসিন্দাদের আরও আরও বেশি সতর্ক হতে হবে। ডেপুটি সিএমওএইচ সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, বর্ধমান শহরে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। জ্বর না ছাড়লে ডেঙ্গুর পরীক্ষা করতে হবে। 


    পুরসভা সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, রসিকপুরে কয়েকদিন ধরেই জ্বরের দাপট দেখা যায়। এলাকার বাসিন্দারা প্রথমদিকে বিষয়টি গুরুত্ব দিতে চাননি। টানা কয়েকদিন জ্বর না ছাড়ার পর তারা রক্তপরীক্ষা করে। তারপরই জানা যায় এলাকার অনেকেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। এদিন পুর এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা ওই এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে কেউ জ্বরে আক্রান্ত রয়েছেন কিনা তা নিয়ে খোঁজ নিয়েছেন। 


     বর্ধমানে রসিকপুরে ডেঙ্গু আক্রান্ত এলাকায় পুরসভার সাফাই  ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)