সাধারণ কামরার যাত্রীদের এবার বিমার সুবিধা দেওয়া হোক, দাবি
বর্তমান | ০১ আগস্ট ২০২৪
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোনও না কোনও প্রান্তে ঘটছে রেল দুর্ঘটনা। যাত্রীদের অনেকে মারা যাচ্ছেন। অনেকে জখম হচ্ছেন। কেউবা স্থায়ীভাবে বিকলাঙ্গ হচ্ছেন। স্বভাবতই আশঙ্কায় ভুগছেন সাধারণ যাত্রীরা। এবার অসংরক্ষিত কামরার যাত্রীদেরও বিমার আওতায় আনার দাবিতে সরব হয়েছে বিভিন্ন যাত্রী সংগঠন। খুব শীঘ্রই তাঁরা ই-মেল করে রেল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন বলে জানিয়েছেন।
সারা ভারতে লোকাল থেকে শুরু করে মেট্রো, কিংবা দূরপাল্লার মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে। প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রীকে দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে পৌঁছে দেয় রেল। এহেন দেশজোড়া পরিষেবায় বর্তমানে প্রায়শই ঘটছে দুর্ঘটনা। কেউ তাঁর স্বামীকে, কেউবা গোটা পরিবার, আবার কেউ পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তিকে হারিয়ে পথে বসছেন। যে হারে রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে তাতে কেউ ট্রেনে চেপে বাড়ি ফিরে আসবেন তার নিশ্চয়তা নেই। ট্রেনে যাতায়াত ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে যাত্রীদের কাছে। নিত্যদিন দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। রেলযাত্রীদের জন্য বিমার সুবিধা রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, শুধুমাত্র এক্সপ্রেস ট্রেনে মেলে ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স। এর জন্য যাত্রীকে অবশ্যই আইআরসিটিসির সাইট বা অ্যাপ ব্যবহার করে টিকিট কাটতে হবে। প্ল্যাটফর্মের কাউন্টার থেকে টিকিট বুকিং করলে মিলবে না এই বিমার সুবিধা। যারজন্য মাত্র ৪৯ পয়সা প্রিমিয়াম লাগে। ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জীবন বিমা মেলে। স্থায়ীভাবে কেউ অক্ষম হলে ৭.৫লক্ষ টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন যাত্রী। এছাড়া জখমদের চিকিৎসার খরচ বাবদ দু’লক্ষ টাকা দেবে বিমা কোম্পানি। যদিও বিমাটি ঐচ্ছিক। ট্রেনের স্লিপার, ফার্স্ট এসি, সেকেন্ড এসি, থার্ড এসির মতো সমস্ত সংরক্ষিত শ্রেণির যাত্রীদের জন্য বিমা মেলে। তবে জেনারেল কামরার যাত্রীদের জন্য কোনও বিমা নেই। রিজার্ভ কামরার যাত্রীদের জন্য রয়েছে ভ্রমণ বিমা। ওয়েটিংয়ের তালিকায় থাকা যাত্রীরা এই বিমার সুবিধা পান না।
মুরারই নিত্যযাত্রী সঙ্ঘের কোষাধ্যক্ষ জগন্নাথ সেবাদত্ত বলেন, ট্রেনে যাতায়াত আর আগের মতো নিরাপদ নয়। যাত্রীরা ট্রেন উঠে আবার যে বাড়ি ফিরবেন তার কোনও গ্যারান্টি নেই। কিন্তু রুজিরুটির প্রয়োজনে অনেক সাধারণ মানুষকে ট্রেনে যাতায়াত করতে হয়। এদের কেউ ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা গেলে গোটা পরিবার অথই জলে পড়ে। তাই আমরা চাইছি, শুধু সংরক্ষিত আসনের যাত্রীদের জন্য নয়, অসংরক্ষিত কামরার যাত্রীদেরও বিমার আওতায় নিয়ে আসুক রেল। তাহলে রেল দুর্ঘটনায় মৃত বা জখম যাত্রীর পরিবারের কিছুটা হলেও সুরাহা হবে। কারও দয়ায় তাঁদের ক্ষতিপূরণ পেতে হবে না। বিমা কোম্পানিই টাকা দেবে।
রামপুরহাট যাত্রী সঙ্ঘের পক্ষে নিয়ামত আলি বলেন, অনেকে যাত্রী কাউন্টার থেকে টিকিট কাটেন। তাই শুধু আইআরসিটিসি নয়, কাউন্টার থেকেও যাতে যাত্রীরা বিমার সুবিধা পান সেই ব্যবস্থা করুক রেল। সেই সঙ্গে বিমার বিষয়টি প্রতিটি স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে ব্যানার, ফ্লেক্স বা নানাভাবে প্রচারে আনা হোক। যাতে সাধারণ যাত্রীরা বিমার বিষয়টি জানতে পারেন। এব্যাপারে পূর্বরেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, স্টেশনের কাউন্টার থেকে টিকিট কাটলে ও সাধারণ কামরার যাত্রীদের ক্ষেত্রে বিমার সুবিধা নেই এটা ঠিক। তবে সিদ্ধান্ত তো রেল মন্ত্রক নেয়।