• সিকিমের লাইফ লাইন চালু হতেই ট্যুর অপারেটরদের ফোন
    বর্তমান | ০১ আগস্ট ২০২৪
  • সুব্রত ধর, শিলিগুড়ি: দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। একমাস পর বুধবার কালিম্পং ও সিকিমের লাইফ লাইন ১০ নম্বর মহাসড়কে গড়াল গাড়ির চাকা। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই ট্যুর অপারেটরদের কাছে আসতে শুরু করেছে ঘন ঘন ফোন। কেউ ১৫ আগস্ট থেকে পর পর চারদিনের ছুটিতে সিকিম ও কালিম্পং ভ্রমণের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। আবার কেউ পুজোয় পাহাড় ভ্রমণের জন্য হোটেল বুকিংয়ের বিষয়ে খোঁজ নেন। এতে উচ্ছ্বসিত ট্যুর অপারেটররা। একইসঙ্গে তাঁরা গত একমাসের ব্যবসায় ক্ষতি সামাল দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে সহায়তা চাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন। 


    চলতি বর্ষার মরশুমে ধস ও তিস্তা নদীর ভাঙনে কালিম্পংয়ে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় জাতীয় সড়ক। ফলে ৩০ জুন থেকে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। টানা একমাস ধরে পাহাড় কেটে রাস্তা তৈরি করেছে কালিম্পং জেলা প্রশাসন। এদিন সকাল ৬টা থেকে ছোট গাড়ির চলাচল শুরু হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তা চলে। রাস্তার একপাশে পাহাড়, আরএকপাশে তিস্তা। এখনও তিস্তার জলস্তরের উচ্চতা যথেষ্ট। কালিম্পং জেলা প্রশাসন ও পূর্তদপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা জানান, গোটা রাস্তার উপর নজর রাখা হচ্ছে। ধস ও নদী ভাঙনের মোকাবিলায় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে। 


    শিলিগুড়ি থেকে সরাসরি সড়ক পথে কালিম্পং ও সিকিমের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র পথ এই জাতীয় সড়ক। এই রাস্তা দিয়ে কার্শিয়াংয়ের কিছু এলাকায় সহজে যাওয়া যায়। তাই রাস্তাটি চালুর খবর চাউর হতেই বাংলা ও ভিনরাজ্যের পর্যটকরা রীতিমতো উচ্ছ্বসিত। তাঁদের একাংশ এদিন ট্যুর অপারেটরদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। 


    পশ্চিমবঙ্গের ইকো ট্যুরিজম বিভাগের চেয়ারম্যান রাজ বসু বলেন, ‘ওই রাস্তা চালু হতেই বিভিন্ন প্রান্তের ট্যুর অপারেটর এবং পর্যটকরা ফোন করছেন। কেউ ১৫ আগস্ট থেকে চারদিনের জন্য পাহাড় ভ্রমণের ব্যাপারে আগ্রহ দেখান। কেউ কেউ হোটেল বুকিংও করেন। আবার কেউ কেউ পুজোর ছুটিতে সিকিম ভ্রমণের জন্য আগেই হোটেল বুকিং করেছেন। রাস্তা খোলায় তাঁরও ফোন করে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ আবার পুজোয় সিকিম ও কালিম্পং ভ্রমণের জন্য এখন হোটেল, রিসর্ট, লজ ও হোমস্টে বুকিং করতে চাইছেন। বুধবার এ ধরনের প্রায় ৫০টি ফোনকল পেয়েছি। পর্যটন ব্যবসায় ব্যাপক উপকার হল। পুজোয় পাহাড় নির্ভর ব্যাবসা ভালো হবে বলেই আশাবাদী।’


    অন্যদিকে, টানা একমাস রাস্তাটি বন্ধ থাকায় পর্যটন ব্যবসায় ব্যাপক লোকসান হয়েছে। গাড়ি চালক, হোটেল, লজ, রেস্তরাঁ এবং হোমস্টে মালিকদের ব্যবসা কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যার প্রভাব কালিম্পং জেলায় সর্বাধিক। পর্যটন ব্যবসায় ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১০০ কোটি টাকা। তাই ব্যবসায়ীদেরকে কর ছাড় দেওয়ার দাবি রাজ্য সরকারের কাছে জানানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন ট্যুর অপারেটররা। রাজ বলেন, ‘কোভিড মহামারির সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানকার ট্যুরিস্ট ট্যাক্সি চালকদের করে ছাড় দিয়েছিলেন। সেই ধরনের ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব এবারও রাজ্য সরকারের কাছে জানাব।’ - নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)