নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: জুলাই মাসের শেষ দিন বৃষ্টিতে ভিজল কলকাতা শহর ও শহরতলি। জলমগ্ন রাস্তায় যাতায়াত করতে গিয়ে নাজেহাল হতে হল মানুষকে। তবে বৃষ্টির কারণে ফসলের ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনায় উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলি ও হাওড়া গ্রামীণ এলাকার কৃষকরা স্বস্তিতে।
প্রসঙ্গত, কলকাতা পুরসভার তথ্য অনুযায়ী এদিন শহরে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে গড়িয়ার কামডহরি এলাকায়। রাত ৮টা পর্যন্ত এখানে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া বীরপাড়া ও বেলগাছিয়াতে ২৭ মিমি এবং ধাপা, তপসিয়া, উল্টোডাঙ্গা, পামার ব্রিজ, ঠনঠনিয়া, বালিগঞ্জ ও চিংড়িঘাটাতে ২০ থেকে ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এদিন দক্ষিণ কলকাতার বহু জায়গা থেকে জল জমে যাওয়ার খবর মিলেছে। সকাল থেকেই পাটুলি, যাদবপুর, গড়িয়া, লেক গার্ডেনস, যোধপুর পার্ক অঞ্চলের বিভিন্ন রাস্তা ছিল জলমগ্ন। বাঘাযতীন উড়ালপুলের উপরে একটা অংশেও জল জমে যায়। তবে উত্তর কলকাতা ছিল কিছুটা স্বস্তিতে। সেখান থেকে জল জমার খবর সেভাবে আসেনি। নিকাশি বিভাগের এক পুর আধিকারিক বলেন, কয়েকটি অঞ্চল ছাড়া জল জমে রয়েছে এমন তথ্য নেই। দ্রুত জল নেমে যায় বলেও দাবি পুর কর্তৃপক্ষের। অন্যদিকে এদিন দুপুরে বরানগর, কামারহাটির বিস্তীর্ণ এলাকায় মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। যার জেরে বরানগর থানা, টবিন রোড সহ বিটি রোডের বারাকপুরগামী লেনও জলমগ্ন হয়ে পড়ে। গঙ্গায় জোয়ার থাকায় সন্ধ্যা পর্যন্ত বহু জায়গায় জল জমে ছিল। বৃষ্টির জেরে কামারহাটির ফিডার রোড, ১৯ নম্বর ডিডি মণ্ডল ঘাট রোড, আরএন টেগোর রোড সহ বিভিন্ন রাস্তায় হাঁটু সমান জল দাঁড়িয়ে যায়। পানিহাটির ঘোলা এলাকা, খড়দহের বিভিন্ন জায়গায় একই ছবি দেখা গিয়েছে। বারাকপুরে আবার বিকেল থেকে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। তবে সন্ধ্যার পর ধীরে ধীরে জল নামতেও শুরু করে। পানিহাটি, বরানগর ও কামারহাটির বিভিন্ন রাস্তায় পাম্প বসিয়ে জল সরানোর কাজ করেছে পুরসভা।
এর পাশাপাশি বারুইপুর, রাজপুর, সোনারপুর পুরসভার বিস্তীর্ণ এলাকাতেও জল জমে। বিপাকে পড়তে হয়েছে মানুষকে। রাজের অন্য জায়গাতেও একই ছবি। উলুবেড়িয়াতে সকাল থেকেই বৃষ্টিপাত। তুমুল বর্ষণে কল্যাণী মহকুমার বেশ কিছু জায়গা জলমগ্ন ছিল বলে অভিযোগ। চাকদহ বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন মূল রাস্তায় জল জমে যাওয়ায় যান চলাচলের সমস্যা তৈরি হয়। চাদুড়িয়া, শিমুরালি, গয়েশপুর জলযন্ত্রণা থেকে রেহাই পায়নি। অন্যদিকে দুপুর দেড়টা নাগাদ বনগাঁয় ঝেঁপে বৃষ্টি নামে। বিভিন্ন রাস্তায় জল দাঁড়িয়ে যায়। গাইঘাটা, বাগদাতেও হয় বৃষ্টি। দুপুর থেকে হুগলি জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে রেলের একাধিক আন্ডারপাসে হাঁটু জল দাঁড়িয়ে যায়। চুঁচুড়া, চন্দননগর, ডানকুনি সহ একাধিক শহরের নিচু জায়গা জলমগ্ন হয়ে পড়ে বলে জানা গিয়েছে। সবমিলিয়ে বর্ষণমুখর দিন ভোগান্তি বাড়িয়েছে মানুষের।