সংবাদদাতা, মেদিনীপুর: বুধবার সকাল থেকে দফায় দফায় বৃষ্টি হয় খড়্গপুর শহরে। বৃষ্টি হয়েছে মঙ্গলবারও। আর তাতেই নাভিশ্বাস বাসিন্দাদের। নিকাশি ঠিক না থাকায় বিভিন্ন এলাকায় জল জমে যায়। রাস্তার উপর দিয়েই বয়ে যায় নর্দমার জল। কিছু এলাকায় দীর্ঘক্ষণ জল জমে থাকায় দুর্ভোগে পড়তে হয় বাসিন্দাদের। অনেক জায়গায় ঘরের মধ্যেও জল ঢুকে যায় বলে অভিযোগ। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের সামনে জল জমে থাকায় রোগী ও পরিজনরা সমস্যায় পড়েন। জল জমে যায় হাসপাতাল চত্বরেও। জল জমে পুরসভার সামনেও। হাসপাতাল থেকে পুরসভা বড় রাস্তার উপর দিয়েই জল বয়ে যায়। একই পরিস্থিতি রেল এলাকার বিভিন্ন জায়গাতেও।
বাসিন্দারা বলেন, খড়্গপুর শহরের এই ছবি প্রতি বছরের। বর্ষা এলেই ভেঙে পড়া নিকাশি ব্যবস্থার ছবিটা ফুটে ওঠে। কিন্তু স্থায়ী সমাধানের কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয় না। তারা বলেন, এমন অনেক এলাকা আছে যেখানে নর্দমার জল রাস্তা দিয়ে বয়ে যায়। জলের তোড়ে জমে থাকা আবর্জনাও রাস্তা দিয়ে বয়ে যায়। এলাকা দূষিত হয়। নোংরা জলের ওপর দিয়েই যাতায়াত করতে হয় বাসিন্দাদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিনের বৃষ্টিতে শহরের রেল এলাকার গোলবাজার, নিউ সেটেলমেন্ট সহ কিছু এলাকা ছাড়াও ঝাপেটাপুর, ইন্দা, নিউ টাউন, আনন্দনগর, বিদ্যাসাগরপুর, দেবলপুর, পাঁচবেড়িয়া সহ অনেক জায়গাতেই নিচু এলাকায় জল জমে যায়। জল বেরতে দীর্ঘ সময় লাগে। জলের ওপর দিয়েই যাতায়াত করতে হয় বাসিন্দাদের। গোলবাজার সব্জি মার্কেটেও জল জমে যায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিকাশি নিয়ে কোনও পরিকল্পনাই নেই। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে।
পুরসভার চেয়ারপার্সন কল্যাণী ঘোষ অবশ্য বলেন, জল জমার খবর পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নর্দমা পরিষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ঝাপেটাপুর, পাঁচবেড়িয়া, নিউ টাউন, ইন্দা, বারবেটিয়ায় জেসিবি দিয়ে নর্দমা পরিষ্কার করে জল নিকাশির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আগামী দিনে জল নিকাশি নিয়ে যাতে একটা মাস্টার প্ল্যান করা যায় সে ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা করা হয়েছে। বড় নর্দমা দিয়ে শহরের জলকে বাইরে বের করে দেওয়ার রূপরেখা তৈরি করতে হবে। তাঁর অভিযোগ, পূর্তদপ্তর ও রেলের নর্দমা ঠিক মতো সংস্কার না করায় সেখানকার জলও পুরসভা এলাকা দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। ফলে চাপ বাড়ছে। পুরসভা এলাকার নর্দমা সেই জলের চাপ নিতে পারছে না। আমরা রেল ও পূর্তদপ্তরকে তাদের নর্দমাগুলি পরিষ্কার করতে বলেছি।
ভাইস চেয়ারম্যান তৈমুর আলি খান বলেন, নিউ টাউনের সীমানায় একটি কারখানা পাঁচিল দিয়ে দেওয়ায় জল বেরতে পারছিল না। তাদের সঙ্গে কথা বলে সেই পাঁচিলের অংশ ভেঙে জল বেরনোর পথ করা হয়েছে।