সংবাদদাতা, মাথাভাঙা: মাথাভাঙা-২ ব্লকের কোচবিহার-ফালাকাটা সড়কের সতীশের হাটে বুধবার রাস্তা অবরোধ করেন আলু চাষিরা। তাঁদের অভিযোগ, বেশকিছু দিন ধরে পাইকাররা আলু কেনা বন্ধ রাখায় সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। একইসঙ্গে বাজারে আলু নিয়ে গেলেও দাম পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে আলু বিক্রি করে আমন সহ সব্জি চাষের জন্য রাসায়নিক সার কিনতে পারছেন না। রাস্তায় আলু ফেলে দিয়ে দেড় ঘণ্টা অবরোধ চলে। পরে ঘোকসাডাঙা থানার পুলিসের হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠে।
৩১সি জাতীয় সড়কে অবরোধের জেরে দু’দিকে পণ্য ও যাত্রীবাহী গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যায়। চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। রোদ ও অসহ্য গরমে নাজেহাল অবস্থা হয় তাঁদের। অবরোধ উঠে যেতেই দ্রুত যান চলাচল স্বাভাবিক করেন পুলিস কর্মীরা। তবে সমস্যার সমাধান না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছেন আলু চাষিরা।
কৃষকরা জানান, সরকার যে নির্ধারিত মূল্য ধার্য করেছে তাতে চাষিরা আলু বিক্রি করতে রাজি। কিন্তু পাইকাররা আলু কিনছেন না। সরকার সেই দামে আলু কেনার ব্যবস্থা করুক। না হলে তাঁরা আরও সমস্যায় পড়ে যাবেন। কয়েকজন আলু চাষি জানান, পাইকাররা আলু না কিনলে খোলা বাজারে তাঁদের বিক্রি করতে হবে। এরকম চলতে থাকলে ৫ টাকা কেজিতেও কেউ আলু বিক্রি করতে পারবেন না। বিপুল ক্ষতির মুখে পড়তে হবে তাঁদের।
প্রসঙ্গত, বাজারে আলুর দাম উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় সম্প্রতি রাজ্য সরকার কিছু নির্দেশিকা জারি করেছে। নির্দিষ্ট দাম বেঁধে দেওয়া সহ কৃত্রিমভাবে বাজারে সঙ্কট যাতে না হয় সেদিকে নজরদারি চালাচ্ছে টাস্কফোর্স। এরফলে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী আলু কেনা বন্ধ করে দিয়েছেন। হিমঘর থেকে আলু বের করার পর বিক্রি করতে সমস্যায় পড়ছেন কৃষকরা।
ঘোকসাডাঙার আলু চাষি জগজীবন রায়, বাপি দে বলেন, বিগত বেশ কয়েক বছর আলু চাষ করে আমরা লোকসানের মুখে পড়েছি। এবারে প্রথম থেকে বাজার ভালো থাকায় কিছুটা লাভের মুখ দেখি। জানতে পেরেছি ভিনরাজ্যে আলু পাঠানো বন্ধ করায় পাইকাররা আলু কিনছেন না। আমরা আমন খেতে সার দেওয়া সহ আগাম কিছু সব্জি চাষের পরিকল্পনা নিয়েছি। এজন্য আলু বিক্রি করা প্রয়োজন। কিন্তু পাইকার আলু নিচ্ছেন না। খোলা বাজারে এত আলু বিক্রি করা সম্ভব নয়। বাধ্য হয়ে রাস্তায় আলু ফেলে অবরোধে করেছি। দাবি না মানলে বৃহত্তর আন্দোলনে শামিল হব।
ঘোকসাডাঙা থানার ওসি কাজল দাস বলেন, ‘আলু চাষিরা অবরোধ করেছিলেন। ওদের সঙ্গে আলোচনা করে অবরোধ তুলে দেওয়া হয়। অবরোধের জেরে যানজট হয়েছিল, তবে আমরা দ্রুত যান চলাচল স্বাভাবিক করে দিয়েছি।’