করলা নদীর জলে বানভাসি হওয়া রুখতে ১১ কোটি টাকার প্রস্তাব
বর্তমান | ০১ আগস্ট ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: করলার পাড়ে বাস। দুঃখ চারমাস। এটাই যেন নিষ্ঠুর বাস্তব জলপাইগুড়ি শহরের অন্তত পাঁচটি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের কাছে। দুর্ভোগের শিকার ১, ২, ৯, ২২, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বড় অংশের বাসিন্দারা। বর্ষার মরশুমে চার থেকে পাঁচবার তাঁদের বানভাসি হতে হয়। ঘর ছেড়ে ঠাঁই নিতে হয় ত্রাণ শিবিরে। দুর্ভোগ থেকে রেহাই পেতে বারবার বাঁধ সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা। কাজও করেছে সেচদপ্তর। কিন্তু তাতে স্থায়ী সুরাহা হয়নি। বাধ্য হয়ে ‘দিদিকে বলো’তে ফোন করে বাঁধের বিষয়টি জানিয়েছেন খোদ তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলার। প্রশাসনের নানা স্তরে বিস্তর চিঠি চালাচালি হয়েছে। অবশেষে জলপাইগুড়ি শহরের নিচু এলাকার বাসিন্দাদের বানভাসি হওয়া ঠেকাতে বড় প্রকল্প হাতে নিতে চলেছে সেচদপ্তর।
সেচদপ্তরের উত্তর-পূর্বের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিফ ইঞ্জিনিয়ার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক বলেন, ‘করলা নদীর জল যাতে শহরে না ঢোকে, তারজন্য দু’টি ব্যবস্থা নিতে হবে। হয় নদীর নাব্যতা বাড়াতে হবে। নতুবা বাঁধ উঁচু করতে হবে। আমাদের সমীক্ষা হয়েছে। যেখানে যেমনটা দরকার সেটাই করা হবে। ১১ কোটি টাকার প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে রাজ্যে। তা অনুমোদন হয়ে টাকা বরাদ্দ হলেই কাজ করা হবে।’
জলপাইগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক ডাঃ প্রদীপকুমার বর্মা বলেন, ‘ফি বছর শহরের বিস্তীর্ণ এলাকায় করলার জল ঢুকে পড়া সত্যিই বড় সমস্যা। বহু মানুষকে ঘর ছাড়তে হয়। ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার পিঙ্কু বিশ্বাস বাঁধ সংস্কারের দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন। সেই চিঠি সেচদপ্তরের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। কিন্তু তারপর অবশ্য কী হয়েছে জানি না।’ তৃণমূল কাউন্সিলার পিঙ্কু বিশ্বাসের অভিযোগ, শহরের মাসকলাইবাড়ি শ্মশানের পিছন থেকে বয়েলখানা বাজার পর্যন্ত বাঁধ সংস্কারের দাবিতে আমি লোকসভা ভোটের আগে দিদিকে বলো’তে ফোন করি। তারপর সেচদপ্তরের আধিকারিকরা এসে জায়গাটি দেখে যান। কিন্তু এরপর কী হয়েছে, আমার কাছে কোনও খবর নেই। তবে এই অংশে যদি বাঁধ সংস্কার করা না হয়, তাহলে নিচু এলাকার মানুষের দুর্ভোগ চলতেই থাকবে। চলতি বর্ষাতেই করলার জল ঢুকে পড়ায় চারবার বাড়ি ছাড়তে হয়েছে ওয়ার্ডের বিশ্বাসপল্লির বাসিন্দাদের। আবারও ভারী বৃষ্টি হলে একই অবস্থা হবে। পিঙ্কুর দাবি, বাঁধটি দিন দিন বসে যাচ্ছে। ইঁদুরে বাঁধের বড় ক্ষতি করেছে। ফলে ভারী বৃষ্টি হলেই ঢুকে পড়ছে করলার জল।