নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাকপুর: আইনজীবীর সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগে জেটিয়া থানার ওসিকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন আইনজীবীরা। যাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার বেশি রাত পর্যন্ত বারাকপুর মহকুমা আদালতে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। কিন্তু তিনি ক্ষমা না চাওয়ায় এবং এসিজেএমের ভূমিকায় সন্তুষ্ট না হওয়ায় বুধবার থেকে এসিজেএমের এজলাস বয়কট করলেন বারাকপুর আদালতের আইনজীবীরা। শুক্রবার পর্যন্ত বয়কট চলবে, একইসঙ্গে এই প্রতিবাদ আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। পরে তাঁর নেতৃত্বে আইনজীবীরা বারাকপুরের পুলিস কমিশনার অলক রাজোরিয়াকে একটি স্মারকলিপি দেন। জেটিয়া থানার ওসির বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে বলে পুলিস কমিশনার জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে নিশ্চয়ই পদক্ষেপ করা হবে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি জেটিয়া থানায় এক মক্কেলকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন বারাকপুর আদালতের আইনজীবী তন্ময় বিশ্বাস। সেই সময় ওসি তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ। তন্ময়বাবু বিষয়টি বার অ্যাসোসিয়েশনকে জানালে তারা ওসিকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানানো হয়। মঙ্গলবার বিকেলে এনিয়ে আইনজীবীরা আদালতে বিক্ষোভ দেখালে বারাকপুর কমিশনারেটের এসিপি সহ পদস্থ পুলিস কর্তারা কোর্টে এসে বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু জেটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ক্ষমা না চাওয়ায় বুধবার সকালে বার অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠক ডাকা হয়। সেখানেই এসিজেএমের এজলাস বয়কটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর ফলে এদিন বহু মামলাকারী ফিরে যান। এসিজেএম আদালতে প্রতিদিন ২৮টি থানার দেড়শো থেকে দু’শোটি মামলা ওঠে। বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুশান্ত রায় বলেন, আইনজীবী পুলিস প্রত্যেকেই একে অপরের পরিপূরক। তাই আমরা এই আন্দোলনকে দীর্ঘায়িত করতে চাইনি। আমরা চেয়েছিলাম ওই ওসি এসে নিঃশর্ত ক্ষমা চান। কিন্তু তিনি ক্ষমা না চাওয়ায় আমরা আন্দোলনের রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। এসিজেএমের কাছ থেকে আমরা যে ভূমিকা আশা করেছিলাম, তা আমরা পাইনি, সেকারণে তাঁর আদালতেও আমরা যাচ্ছি না। তবে অন্য আদালত চালু আছে।
এদিকে, আজ বৃহস্পতিবার বিহারের গ্যাংস্টার রোশন যাদব এবং কাল শুক্রবার সুবোধ সিংকে আদালতে তোলার কথা, সেইসব মামলার কী হয়, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন পুলিসকর্তারা। আদালত বয়কট করায় হাইকোর্ট থেকেও খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে বারাকপুর আদালতে। বারাকপুর আদালতে বন্ধ এজলাস -নিজস্ব চিত্র