দুর্গাপুজোয় এত টাকা ক্লাবকে! আসছে কোথা থেকে? জনস্বার্থ মামলা হল কলকাতা হাইকোর্টে
হিন্দুস্তান টাইমস | ০১ আগস্ট ২০২৪
গত কয়েকবছর ধরেই ক্লাব, বারোয়ারিগুলিকে দুর্গাপুজোর জন্য় বেশ মোটা টাকা অনুদান দিচ্ছে রাজ্য সরকার। এনিয়ে নানা সময়ে নানা সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। কিন্তু বার বারই প্রশ্ন ওঠে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বার বার বলা হয় আর্থিক প্রতিকূলতার কথা। সেই পরিস্থিতিতে কীভাবে এত টাকার অনুদান? কোথা থেকে এই বিপুল টাকা আসছে সরকারের কাছে?
এবার সেই প্রশ্ন তুলেই জনস্বার্থ মামলা হল কলকাতা হাইকোর্টে।
এবার ক্লাবগুলিকে পুজোর অনুদান একলাফে ১৫ হাজার টাকা করে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এবার পুজোর অনুদান করা হয়েছে ৮৫ হাজার টাকা। এমনকী বিদ্যুতের ছাড়ও ৬৬ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৭৫ শতাংশ করে দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে এই যে বিপুল টাকা সেটা কোথা থেকে আসছে? এমনকী বছর বছর এই পুজোর অনুদান লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। আগামী বছর এই পুজোর অনুদান ১ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন খোদ মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
সৌরভ দত্ত নামে এক ব্যক্তি ফের এনিয়ে মামলা করেছেন। এর আগেও তিনি এই অনুদান সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে মামলা করেছিলেন হাইকোর্টে। এবারও তিনি সেই মামলায় নতুন করে আবেদন করলেন। মূলত যেটা বলা হচ্ছে যে নিরপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করে দেখতে হবে। এই বিপুল পরিমাণ অনুদানের টাকা কোথা থেকে আসছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে এই মামলায়। মূলত এই যে বিপুল পরিমাণ টাকা তার উৎস কী সেটা জানতে চাওয়া হয়েছে।
এই ক্লাবগুলিকে অনুদান দেওয়া নিয়ে এর আগে বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ঠিক কী বলেছিলেন?
এদিকে এর আগেও পুজোর অনুদান সম্পর্কিত বিষয়গুলি উঠে এসেছিল কলকাতা হাইকোর্টে।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দুর্গাপুজোর অনুমতি সংক্রান্ত একটি মামলা ছিল কলকাতা হাইকোর্টে। তমলুকের একটা দুর্গাপুজোর অনুমতি সংক্রান্ত মামলা। সেখানে বিচারপতি জানতে চান, কতগুলি পুজো হয়? তমলুক পুরসভার আইনজীবীর জবাব, ৪০-৫০টি দুর্গাপুজো হয়।কালীপুজো ২০০-২৫০টি হয়। এরপর বিচারপতি অমৃতা সিনহা কার্যত পুজো অনুদান নিয়ে ফুঁসে ওঠেন। তিনি জানিয়েছেন, মানুষ পেনশন পাচ্ছেন না, বেতন পাচ্ছে না, চাকরি পাচ্ছে না, এনিয়ে রোজ মামলা আসছে, আর দুর্গাপুজোয় ক্লাব পিছু ৭০ হাজার?
একদিকে আর্থিক কারণে নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে না পারা অন্যদিকে হাজার হাজার টাকার পুজো অনুদান।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের জমানাতেই গত কয়েকবছর ধরে পুজো অনুদান দেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী এনিয়ে আগেই বলেছিলেন, আগে তো কোনও ক্লাবকে কেউ সাহায্য করত না। আমার মাথায় এই চিন্তাটা আসে।
কার্যত মুখ্যমন্ত্রীর ভাবনায় এই বিপুল অনুদান। কিন্তু সরকারি টাকা দিয়ে কীভাবে ক্লাবকে পুজো অনুদান দেওয়া হয় তা নিয়ে বিতর্কটা কোনও অংশে কমেনি। তবে অনেকের মতে, ক্লাবকে হাতে রাখার জন্য সরকারের এই ভাবনা। তাছাড়া একটা বিশেষ সম্প্রদায়কে তৃণমূল সরকার তোষণ করে বলে যে অভিযোগ রয়েছে সেটা থেকে বেরিয়ে আসার জন্যও দুর্গাপুজোতে এই বিপুল অনুদানের ভাবনা।