• সিপিএমের অন্দরে 'বিভীষণ' কারা? ভোট পর্যালোচনা রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর দাবি!
    ২৪ ঘন্টা | ০২ আগস্ট ২০২৪
  • মৌমিতা চক্রবর্তী: সিপিএমের অন্দরে 'বিভীষণ' কারা? পার্টি লাইনের বাইরে গিয়ে অন্য প্রার্থীকে ভোট! এমনকী, 'দলের প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও বহু এলাকায় নিষ্ক্রিয় ছিলেন সিপিএম কর্মীরা'। এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করা হল ভোট-পর্যালোচনা রিপোর্টে।

    সংসদীয় রাজনীতিতে সিপিএমের রক্তরক্ষণ অব্যাহত। সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটে এ রাজ্যে ২৩ আসনে প্রার্থী দিয়েছিল বামেরা। স্রেফ হার নয়, দমদমে সুজন চক্রবর্তী আর  মুর্শিদাবাদে মহম্মদ সেলিম বাদে সবকটি আসনে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে গিয়েছে দলের প্রার্থীদের। কেন? ভোট-বিপর্যয়ে কারণ এখন কাটাছেঁড়া চলছে পার্টির অন্দরে।  

    সামনেই বর্ধিত রাজ্য কমিটির বর্ধিত অধিবেশন। সেই অধিবেশনের আগেই লোকসভা ভোটের ফল ও দলের পরিস্থিতি প্রাথমিক পর্যালোচনা করেছেন সিপিএম শীর্ষ নেতৃত্ব। রিপোর্ট আকার তা প্রকাশ করা হয়েছে। রিপোর্টের  ২১, ও ২২ নং পাতায় উল্লেখ, 'পার্টি লাইনের বিরুদ্ধে গিয়ে কিছু দলের প্রার্থীকে পার্টি সদস্য, কর্মীর সমর্থন করেছেন বা ভোট দিয়েছেন। নির্দিষ্ট প্রার্থীকে বা দলকে সমর্থনের পিছনে স্থানীয় সংস্থার নির্বাচন ইত্যাদির মতো সংকীর্ণ স্বার্থ কাজ করেছে। এমন সংসদীয় সবিধাবাদেরও উদাহরণ রয়েছে'।

    এদিকে দলের সভা-সমাবেশে ভিড় হচ্ছে। প্রচুর মানুষ আসছেন। কিন্তু নিচুতলায় সংগঠন সামলানো বা বুথ আগলে রাখার মতো কর্মী যে নেই, প্রাথমিক ভোট-পর্যালোচনা রিপোর্টে তা মেনে নিয়েছেন সিপিএম শীর্ষ নেতৃত্ব। রিপোর্টেই স্পষ্ট, সাধারণ মানুষের মন বোঝা বা বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ ঘাটতি রয়ে গিয়েছে।  

    রিপোর্ট এও স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে, 'সাধারণ মানুষের সঙ্গে পার্টি কার্যত বিচ্ছিন্ন। এটা বিবেচনার রেখে জনগণের চাহিদা ও মনোভাব, বিরোধীদের প্রচার ধারার মতো বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন। জনগণ কোন বিবেচনায় রায় দিচ্ছেন, তা বোঝার চেষ্টা করতে হবে'।

    তৃণমূল নেতা অরূপ চক্রবর্তীর কটাক্ষ, 'একই ট্র্যাডিশন ২০১৯ থেকে সিপিএম চালিয়ে যাচ্ছে। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রাভঙ্গ করা।  এরা জানে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজনৈতিকভাবে হারাতে পারবে না। তাই পার্টিটাকে বিজেপির কাছে বন্ধক রাখতে দু'মিনিট দেরি হয় না'। তাঁর দাবি, গ্রামের পর গ্রামে যেখানে সিপিএমের এজেন্ট ঢুকেছে, বিজেপির এজেন্ট ঢোকেনি। বিজেপি এগিয়ে গিয়েছে, সিপিএম পিছিয়ে গিয়েছে। এমন বুথের সংখ্যা পশ্চিমবঙ্গের ৮০ থেকে ৯০।  অর্থাত্‍ বুঝতে অসুবিধা হয় সিপিএমের ভোটটা কাদের বাক্সে পড়েছে'। 

    বিজেপি নেতা সজল ঘোষের মতে, 'সিপিএম নেতৃত্ব যে আজও বাস্তবতা অনেক দুরে, সেটা নিচুতলার কর্মীরা বুঝেছেন। ওদের পলিটব্যুরোর মতো যত ব্যুরো আছে, তাদের বোঝার মতো জ্ঞান ছিল না'। তিনি বলেন, আমি একটা বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিল, সেখানে আমি হেরেছি, কারণ সিপিএম ভোট কেটেছে। তৃণমূলের হাতক শক্ত করতে সমস্ত নিচুতলার কর্মীরা রাজি ছিলেন না। তাই তাঁরা বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। কারণ, তারা বাস্তবতা বোঝেন। ওদের বিগ্রেডে ডাকুন, যত লাখ লোক হবে, গোপন ব্যালেটে ভোট করতে বলুন, দেখবেন ভোট পাবে না'।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)