বর্ষার মরশুমেও আত্রেয়ীতে মিলছে না রাইখর মাছ, নেপথ্যে দূষণ?
প্রতিদিন | ০২ আগস্ট ২০২৪
রাজা দাস, বালুরঘাট: বর্ষার মরশুমেও আত্রেয়ীতে মিলছে না বালুরঘাটের বিশেষ মাছ রাইখর। নদী দূষণই এর অন্যতম কারণ বলে দাবি। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলা মৎস্যদপ্তর। রাইখরের মতো বিশেষ প্রজাতি-সহ অনান্য মাছের বিলুপ্তি রোধে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জেলা মৎস্য আধিকারিকের।
জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী আত্রেয়ী। বাংলাদেশ থেকে এসে এই নদী ফের বাংলাদেশেই প্রবেশ করেছে। তবে দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ ও বালুরঘাট ব্লকের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত এই নদীর গতিপথ ৫৮ কিলোমিটার। এই গতিপথে পাওয়া যায় জেলার মানুষের চাহিদার ৪০ শতাংশ মাছের যোগান। বাকিটা আসে পুকুর, খালবিল এবং বাইরে থেকে। আত্রেয়ীতেই মেলে বিশেষ প্রজাতির সুস্বাদু রাইখর মাছটি। ছোট প্রজাতির এই মাছটি পরিণত অবস্থায় খোলা বাজারে বিক্রি হয় ৫০০-৬০০ টাকা কিলোদরে। বালুরঘাট-সহ আশপাশের বাজারে সারাবছর এই মাছটির জোগান মেলে। কিন্ত বর্ষায় এই মাছের জোয়ার আসে আত্রেয়ীতে। দাম কিলো প্রতি ২০০-৩০০ টাকার পৌঁছে যাওয়ার তা সাধ্যের মধ্যে এসে যায় গৃহস্তর। বাড়ি বাড়িতে কার্যত রাইখর উৎসব লেগে যায় এসময়। রাইখরের হরেকরকম মেনু দিয়েও অতিথি আপ্যায়ন এখানকার রেওয়াজ। তবে এবার বর্ষার এই মরশুমে বাজারে তেমন জোগান নেই রাইখরের। অন্যতম বিশেষ প্রজাতির এই মাছ কি তবে বিলুপ্তির পথে! প্রশ্ন পরিবেশ প্রেমী সংস্থা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলা মৎস্যদপ্তর। তবে নদী দূষণকেই অন্যতম কারণ হিসেবে তুলে ধরেছে মৎস্য দপ্তর।
জেলা মৎস্য আধিকারিক অভিজিৎ সরকার বলেন, প্রথমত আবহাওয়া একটি কারণ। সাধারণত নদীর কিনারায় শ্যাওলায় মাছ বংশবিস্তার করে। ঝিরিঝিরি বৃষ্টি মেঘলা আবহাওয়া অনুকুল হয় মাছের বংশবৃদ্ধির জন্য। কিন্ত গতবার থেকে শুরু করে এবারও তেমন অনুকুল আবহাওয়া অমিল আমাদের এখানে। তবে এই নদীর রাইখর মাছ কম হওয়ার জন্য অন্যতম কারণ নদী দূষণ। শহরের প্লাস্টিক আবর্জনায় দূষিত জল সরাসরি কিনারা দিয়ে নদীতে গিয়ে পরছে। ফলে কিনারাগুলি অনুপযুক্ত। মাছ আর বংশবিস্তার করতে পারছে না। নদীতে ময়লা জল ফেলার আগে গঙ্গা প্রকল্পর মত এখানেও রিসাইকল করা জরুরি। প্রশাসনের বিভিন্ন মহলের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি তুলে ধরেছি আমরা। প্রচার করেছি। আমরা টেকনিক্যাল বিষয়গুলি সরাসরি দেখি। এসব বিষয়ে প্রশাসন নজর দেয়। নদী ও মাছ রক্ষায় দূষণ রোধে জোর দেওয়ার আবেদন আমাদের।